কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ একলিমুর রেজার মৃত্যুতে চিকিৎসকের অবহেলার প্রতিবাদ, আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার স্থাপনসহ ছয় দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রতিবাদ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন ও দেড় ঘণ্টা সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে পরিসংখ্যান বিভাগে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা সুমী বলেন, ‘প্রশাসনের অবহেলার কারণে আমরা রেজা স্যারকে হারিয়েছি। প্রশাসনের কোনও অনুতাপ নেই। আমাদের প্রথম তিনটি দাবি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টা পর আমরা আর অনুরোধ করবো না। আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকু করবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান সমিতির সাধারণ সম্পদক ইমরুল এহসান বলেন, ‘এই মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন চিকিৎসকদের বেতন দিচ্ছে। অথচ প্রশাসন ডাকলে আসেন না চিকিৎসকরা। শিক্ষকরা যেমন চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন, ছাত্ররাও তাদের কাছ থেকে নিরাপদ নন।’
প্রতিবাদ মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী বরাবর স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের অবহেলার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকদের অপসারণ, শাহ একলিমুর রেজার নামে সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত মেডিক্যাল সেন্টার স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, স্যারের প্রাপ্য আর্থিক প্রণোদনা এক মাসের মধ্যে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা।
শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি ও মানববন্ধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন বলেন, ‘তাদের দাবিগুলো নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবো। শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি তুলেছেন, তা পূরণের চেষ্টা করবো আমরা। আমাদের যে নতুন প্রকল্প সেখানে মেডিক্যাল সেন্টার হবে।’
মৃত শিক্ষকের আর্থিক প্রণোদনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা অফিসিয়াল ব্যাপার। আমরা তার পরিবারকে আবেদন করতে বলেছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে টাকা পেয়ে যাবে ওই শিক্ষকের পরিবার।’
এর আগে গত বুধবার (১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সহকারী অধ্যাপক শাহ একলিমুর রেজা স্ট্রোক করেন। তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।