X
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
২৩ বৈশাখ ১৪৩২

কারফিউতেও থেমে নেই তাদের কর্মযজ্ঞ

ইবি প্রতিনিধি
২৪ জুলাই ২০২৪, ১৭:৩৮আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৮:৩০

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করে সরকার। গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতায় মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। বন্ধ রয়েছে দেশের স্বাভাবিক গতিশীল কার্যক্রম।

তবে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নেও থেমে নেই এক দলের কর্মযজ্ঞ। দিনরাত হাতুড়ির টুংটাং শব্দে আর কাঠফাটা রোদে পুড়ে চলছে তাদের নিত্যদিনের পেশাগত কাজ। বলা হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনে নিয়োজিত শ্রমিকদের কথা। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় কিংবা দেশের রাজনৈতিক বা সর্বজনীন কোনও ইস্যু নিয়ে তৈরি সংঘাত-সংঘর্ষ; কিছুই থামাতে পারে না তাদের কাজের গতি। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে নির্মাণকাজ করে চলেন আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শ্রমিকেরা।

সরেজমিন দেখা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রজেক্টের আওতায় চলমান ১০তলাবিশিষ্ট ৩টি আবাসিক হল এবং দ্বিতীয় অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। দেশব্যাপী সংঘাতের জেরে ক্যাম্পাসের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও কাজ ছাড়েননি এসব শ্রমিকেরা। কোথাও চলছে শাটারিংয়ের কাজ, কোথাওবা ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। কেউ বালুর বস্তা মাথায় নিয়ে জায়গামতো ফেলে আসছে আবার কেউ মেশিন দিয়ে রড ঝালাই করছে। বয়স্ক কয়েকজনকে দেখা যায় কাজ শেষে ছায়ায় বসে পান খাচ্ছেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুবছর যাবৎ এসব নির্মাণাধীন ভবনে নির্মাণের কাজ করছেন তারা। মেগা প্রজেক্টের সব সাইট মিলে প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে সহযোগীদের মজুরি ৪০০-৭০০ এবং মিস্ত্রিদের মজুরি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। এই আয় দিয়েই জীবনযাপন করতে হয় তাদের। প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট যে দুর্যোগই হোক না কেন, পেটের দায়ে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হয় তাদের। সারাদিনে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত টাকায় চেষ্টা করেন প্রিয়জনের মুখে তিনবেলা খাবার তুলে দিতে।

কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, ‘দেশের এমন পরিস্থিতিতে কাজে আসতে ভয়ই করে। কে কখন এসে গাড়ি ভেঙে দেয় আবার কোন দিক থেকে পুলিশের গুলি এসে গায়ে লাগে তার কোনও নিশ্চয়তা নাই। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে আসতে হয়। আমরা যদি ভয়ে কাজে আসা বাদ দিই তাহলে সপ্তাহ শেষে কিস্তির টাকা জুটবে কীভাবে? আমাদের কাছে এখন জীবনের চেয়ে টাকার দাম বেশি।’

নির্মাণকাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা রবি বলেন, ‘ঝুট-ঝামেলা যেটাই হোক আমরা আমাদের সাইটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ঠিকাদার, চিফ ইঞ্জিনিয়ার বা লেবাররা কেউই কাজ ফেলে রাখার পক্ষপাতী নন। গাড়ি বন্ধ থাকায় আমাদের আসা-যাওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে ঠিক কিন্তু এসব অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখলে এদের পরিবারের মুখে ভাত দেবে কে? প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তাগাদা দেওয়া হচ্ছে, আমরা দ্রুত কাজ শেষ করতে বদ্ধপরিকর।’

/কেএইচটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
আনন্দ শোভাযাত্রায় না আসায় শিক্ষার্থীদের খাবার বন্ধ করলেন ইবি প্রভোস্ট
বঙ্গবন্ধু হলের নামবদল নিয়ে ফেসবুক পোস্ট, ইবি শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া
ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
সর্বশেষ খবর
ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে হত্যা: চার জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ২
ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে হত্যা: চার জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ২
ঈদুল আজহায় ছুটি ১০ দিন, দুই শনিবার খোলা থাকবে অফিস
ঈদুল আজহায় ছুটি ১০ দিন, দুই শনিবার খোলা থাকবে অফিস
খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত: জিএম কাদের
খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত: জিএম কাদের
শাওকীর সিরিজে শ্বাশত, আসছে ‘গুলমোহর’
শাওকীর সিরিজে শ্বাশত, আসছে ‘গুলমোহর’
সর্বাধিক পঠিত
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
প্রাথমিকে আরও একটি অধিদফতর হচ্ছে
প্রাথমিকে আরও একটি অধিদফতর হচ্ছে
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আইএমএফ-বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক শেষ, কিস্তি ছাড়ে কী সিদ্ধান্ত হলো?
আইএমএফ-বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক শেষ, কিস্তি ছাড়ে কী সিদ্ধান্ত হলো?