X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচর ভালো যে কারণে

শেখ শাহরিয়ার জামান, ভাসানচর থেকে ফিরে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:৪৫আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:৫১

১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময় মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গারা। সবসময় তারা সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। যদিও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া ও গোপনে বসবাসের খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। ২০১৭ সালে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসার পর কক্সবাজারে এই জনগোষ্ঠির আকার ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ফলে সরকার ওই জেলায় বাড়তি চাপ কমাতে নোয়াখালীর ভাসানচরে তাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয়। ডিসেম্বর থেকে কয়েক দফায় সাত হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং এই দুই অঞ্চলের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভাসানচর রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য ভালো, স্বাস্থ্যসম্মত এবং অধিকতর নিরাপদ। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন

ভাসানচরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে জীবন ধারণের সব ধরনের সুবিধাসহ পরিকল্পিতভাবে একটি নগরী গড়ে তোলা হয়েছে। পাকা বাড়ি, পর্যাপ্ত রোড নেটওয়ার্ক, পানি ও পয়োনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অনেক সুবিধা আছে। এর বিপরীতে কক্সবাজারে ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় কাঁচাঘরে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে। অধিক সংখ্যক রোহিঙ্গা ছোট একটি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে ঘিঞ্জি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে পানিসব অন্যান্য অনেক জিনিসের অপ্রতুলতাও রয়েছে। ভাসানচর

এ বিষয়ে আশ্রয়ন প্রকল্প-৩ (ভাসানচর প্রকল্প) এর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে ছয় হাজার ৫০০ একর জায়গায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। কিন্তু এখানে ১৭০০ একর জায়গায় এক লাখ রোহিঙ্গার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তুলনামূলক বিশ্লেষণ

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের বাড়িগুলো বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি। কিন্তু ভাসানচরে পরিকল্পিতভাবে প্রতিটি মানুষের জন্য ৩ দশমিক ৯ বর্গমিটার মানসম্মত জায়গা নিশ্চিত করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে পাকা ঘর।

ঘনবসতির কারণে কক্সবাজারে পানির স্থর প্রতিনিয়ত নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। অন্যদিকে ভাসানচরে মাটির ভূভাগে যথেষ্ট পানি থাকার পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানি ও বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা আছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন

২৪ ঘণ্টা বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে ভাসানচরে। পয়োনিষ্কাশনের জন্য যথেষ্ট চওড়া ড্রেনেজ সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও বাচ্চাদের পড়াশোনার ব্যবস্থাও আছে।

সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে নিরাপত্তা। এই দ্বীপে ১৯ ফুট উচুঁ বাধ তৈরি করা হচ্ছে। সামাজিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীরা সার্বক্ষণিক পাহারায় রয়েছেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি পণ্য

চ্যালেঞ্জ

প্রায় তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পে চ্যালেঞ্জও আছে।  প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত একাধিক লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই গোটা প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য একটি বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হবে এবং এটি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ১৯ ফুট বাঁধ দ্রুত তৈরি করা। বর্তমানে ৯ ফুট উচ্চতার বাঁধ তৈরি হয়ে গেছে। বাকি ১০ ফুট উচ্চতার কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন-

ভাসানচরে কেমন আছেন রোহিঙ্গারা

ভাসানচরের সুপার শপে প্রতিদিন বিক্রি ৫০ হাজার টাকা

/এফএস/
সম্পর্কিত
অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় মিয়ানমারের নাগরিকসহ আটক ৪
ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে সেমিনার করেছেন রোহিঙ্গারা, ৩২ জন আটক
আরসার বিরুদ্ধে অভিযান নিয়ে যা বললো র‌্যাব
সর্বশেষ খবর
‘জার্মানির তৃতীয় বিভাগের ক্লাবের সঙ্গেও বাংলাদেশকে মেলানো যায় না’
‘জার্মানির তৃতীয় বিভাগের ক্লাবের সঙ্গেও বাংলাদেশকে মেলানো যায় না’
তোরণ ও ব্যানার টানিয়ে জরিমানা গুনলেন তিন প্রার্থী
তোরণ ও ব্যানার টানিয়ে জরিমানা গুনলেন তিন প্রার্থী
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নীরবে মামুনুল হক,  শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
নীরবে মামুনুল হক, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক