X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাঙালিদের শুভেচ্ছা নিয়ে জাপানে রওয়ানা দেন বঙ্গবন্ধু

উদিসা ইসলাম
১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০০আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০০

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১৭ অক্টোবরের ঘটনা।)

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের এদিন জাপান সফরে রওয়ানা দেওয়ার আগে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের শুভেচ্ছা নিয়ে জাপান যাচ্ছি।’ এদিন সন্ধ্যায় সপ্তাহব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরে টোকিওর পথে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু তেজগাঁও বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এই সফরের ফলে দু'দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু জানান, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতাসহ সব ব্যাপারেই তিনি জাপান সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। জাপানি জনগণের শুভেচ্ছা নিয়েই তিনি দেশে ফিরে আসবেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ বিমানের ৭০৭ বোয়িং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাত্রা করে। তেজগাঁও বিমানবন্দরে তাকে এক সংক্ষিপ্ত ও আন্তরিকতাপূর্ণ বিদায় সম্বর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনা জানাতে জাতীয় সংসদের স্পিকার মাহমুদুল্লাহ, অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার পরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি কোরবান আলী, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, দফতর সম্পাদক আনোয়ার চৌধুরী, সমাজকল্যাণ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোস্তফা সারোয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকায় বসবাসকারী বেশ কিছু জাপানি নাগরিক জাতীয় পতাকা নেড়ে বঙ্গবন্ধুকে সম্বর্ধনা জানান। দুটি জাপানি মেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।

দৈনিক বাংলা, ১৮ অক্টোবর ১৯৭৩

বঙ্গবন্ধুকে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদসহ পরিবারের সদস্যরা এই সফরে যান। এসময় বঙ্গবন্ধুকে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। বিমানে ওঠার সময় বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ও তার সন্তানকে প্রধানমন্ত্রী আদর করে দেন। ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকা ফিরে আসার কথা।

এদিকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী এই দিন সকালে পৌঁছালে তাকে বিপুল সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হবে। জাপান বেতারের খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে বিপিআই জানায়, জাপানের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।

ডেইলি অবজারভার, ১৮ অক্টোবর ১৯৭৩

স্বাধীন বলেই আরবদের পাশে দাঁড়াতে পারছি

‘আরব ভাইয়েরা সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তাদের ন্যায়সঙ্গত লড়াইয়ে বিজয়ী হবেন অবশ্যই।’ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এইদিন পুনরায় তাঁর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, আরবরা তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বার্থ ও আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছেন। তাই এ লড়াইয়ে তাদের সাফল্য অবধারিত। বাসসের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়ছেন যেসব ভাইয়েরা, তাদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশের মেডিক্যাল টিম সিরিয়া যাচ্ছে।

গণভবনে তাদের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোর-এর লোকদের নিয়ে গঠিত এই মেডিক্যাল টিম বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গণভবনে যান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট কোরবান আলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

সাতজন ডাক্তার, কয়েকজন জেনারেল ডিউটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান-এর মাধ্যমে টিম গঠন করা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ছোট আকারের একটি অপারেশন থিয়েটার চালু উপযোগী সরঞ্জাম নিয়ে যাবেন তারা। টিমটি এই অঞ্চলের দেশের মধ্যে প্রথম মেডিক্যাল টিম।

বঙ্গবন্ধু বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। সত্য ও ন্যায়ের জন্য যে আরব লড়ছে বাংলাদেশ সব সময় তার পাশে থাকবে। তাদের জয় সুনিশ্চিত। এটা ইতিহাসের নজির যারা তাদের ন্যায়সঙ্গত সত্যের জন্য লড়াই করে অবশেষে জয় হয় তাদেরই। তাদের ক্ষেত্রেও এটা সত্য হবে।

বঙ্গবন্ধু পুনরায় আরবের প্রতি সংহতি ঘোষণা করে বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে তাদের জন্য ভালোবাসা দেওয়া সম্ভব, এ ছাড়া আর কিছু দেওয়ার নেই। প্রধানমন্ত্রী মেডিক্যাল টিমের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, তাদের জন্য বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিয়ে যাচ্ছেন আরবভূমিতে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারা তাদের সেবা ও আন্তরিকতা দিয়ে যেন বাংলাদেশের পতাকা সমুন্নত করেন।

বঙ্গবন্ধু বলেন, পাকিস্তানের দাসত্বের বন্ধনে থাকলে আমাদের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব হতো না। মেডিক্যাল টিমের সাফল্য কামনা করে বঙ্গবন্ধু আশা প্রকাশ করেন, তারা যেন দেশে ফেরেন জয়ের মালা নিয়ে।

 

 

/এফএ/
সম্পর্কিত
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ গিনেস বুকে ওঠানোর উদ্যোগ
সর্বশেষ খবর
মাঠে ফিরেই হাল্যান্ডের গোলে জিতলো ম্যানসিটি
মাঠে ফিরেই হাল্যান্ডের গোলে জিতলো ম্যানসিটি
জাতীয় দল রেখে ঢাকা লিগে সাকিবের খেলার ব্যাখ্যা দিলেন নির্বাচক
জাতীয় দল রেখে ঢাকা লিগে সাকিবের খেলার ব্যাখ্যা দিলেন নির্বাচক
পাপন শুনেছেন, তামিম নাকি সামনের বছর ফিরবেন!
পাপন শুনেছেন, তামিম নাকি সামনের বছর ফিরবেন!
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে