কোটা আন্দোলন নিয়ে সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয়েছে। ওই কমিশনকে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সহায়তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২২টি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের বাংলাদেশ প্রধানকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা যে কমিশন গঠন করেছি, তাদের আমরা কাজ করতে দিই এবং তাদের কাজের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর যদি আরও কিছু করতে হয়, সেটি আমরা করবো। তবে আমরা আশাবাদী যে আমাদের যে কমিশন আছে, সেটি এক সদস্য থেকে তিন সদস্য হতে যাচ্ছে। তারা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে যারা দুষ্কৃতকারী, যারা মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের আইনের আওতায় আনতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নির্দিষ্ট টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স কিছু থাকে, সেটি অবশ্যই আমরা বিবেচনা করবো।’
জাতিসংঘ থেকে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের অবস্থান আমরা তুলে ধরেছি। সেটি হচ্ছে যে জুডিশিয়াল কমিশন করা হয়েছে, সেটির ব্যাপ্তি বাড়ানো হয়েছে। প্রথমে এটির নির্দিষ্ট টার্মস অব রেফারেন্স ছিল। এখন এটি পুরো সময়ের জন্য করা হয়েছে। সেই কমিশন কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে আমরা জানি। সেই কমিশনের কাজের সহায়তার জন্য বিশেষ করে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, কারও যদি নির্দিষ্ট কোনও অফার থাকে, সেটি আমরা বিবেচনা করতে পারি। সেই বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছি। জাতিসংঘে আমাদের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে আমার গতকাল রাতে কথা হয়েছে। কী ধরনের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, এটি ফরেনসিক হতে পারে, এটি আইনি হতে পারে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একাধিক দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে এবং তাদের যদি নির্দিষ্ট কোনও অফার থাকে, সেটি আমরা আমাদের কমিশনকে জানিয়ে দেবো। কমিশনেরও যদি কোনও নির্দিষ্ট কোনও কিছু চাওয়ার থাকে বা কোনও কিছুর যদি অভাব থাকে, সেটি আমাদের জানালে আমরা সেটি বিদেশিদের জানাবো। ইতালির রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সহায়তার আগ্রহ দেখিয়েছেন। দেশটির রায়ট এবং এর পরবর্তী তদন্তের বিষয়ে তাদের বিশেষায়িত জ্ঞান আছে।’
এদিকে একটি স্বাধীন মিশন পাঠানোর বিষয়ে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর বিষয়ে মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে বলেছে, কিন্তু এটি নির্দিষ্ট কিছু নয়। এটি ঢালাও একটি প্রস্তাব। সুতরাং তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা করবো। কিন্তু আমাদের যে কমিশনটি আছে, সেটির কাজ করতে দেওয়া হোক। পরে কমিশনের যদি কোনও প্রয়োজন থাকে, সেটি আমরা দেখবো। তবে এ মুহূর্তে আমরা আরেকটি আলাদা বা সমান্তরাল কোনও কিছু করতে চাই না।’