শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে ভারতের। কিন্তু আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। এ বিষয়ে ভারতের যেমন কোনও অপশন নেই, তেমনই বাংলাদেশেরও কোনও অপশন নেই— বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত এক কার্টেন রেইজার অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একই সময়ে নিউ ইয়র্কে যাচ্ছেন না। কারণ নরেন্দ্র মোদি আগে চলে আসবেন। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দেরিতে যাচ্ছেন। কাজেই তাদের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে।’
‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য ভারত ভালোভাবে নেয়নি এবং সেজন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হচ্ছে না’–মিডিয়ায় প্রকাশিত এ ধরনের রিপোর্টের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘অনেক কথা আমাদেরও পছন্দ নাও হতে পারে। কাজেই আমার কথা ওনার পছন্দ হলো না, বা ওনার কথা আমার পছন্দ হলো না— এটি নিয়ে বেশি বিচলিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। বিষয়টি এমন নয় যে, এ জন্য বাংলাদেশ ভারত থেকে বহু দূরে যাবে। আবার ভারতও অন্য কোথাও চলে যাবে এবং প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে না। প্রতিবেশী যেহেতু পরিবর্তন হয় না, কাজেই কথা পছন্দ হোক বা না হোক... ভারত থেকেও বিভিন্ন সময়ে অগ্রহণযোগ্য কথাবার্তা হয়েছে। এজন্য আমার মনে হয়, এ বিষয়টিতে এত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। শুধু এ কারণে তিনি (মোদি) দেখা করবেন না, বা দেখা হচ্ছে না– আমার সেটি মনে হয় না।’
‘দ্বিপাক্ষিক অনেক বিষয় আছে এবং সেগুলো নিয়ে আলোচনা বজায় রাখতেই হবে। এটি নিয়ে ভারতেরও কোনও অপশন নেই, আমাদেরও কোনও অপশন নেই’, বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘তবে নিউ ইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক হবে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘জয়শংকরের সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে যে এক ধরনের টানাপড়েন চলছে, এটা স্বীকার করতে হবে। সমস্যার সমাধান করতে হলে, সমস্যার অস্তিত্ব অস্বীকার করলে চলবে না। আমরা অবশ্যই টানাপড়েন পেছনে ফেলতে চেষ্টা করবো এবং ওয়ার্কিং রিলেশন যেন হয়। তবে সম্পর্কটা হতে হবে সার্বভৌমত্ব, মর্যাদা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে। এর ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব এবং আমরা সেই চেষ্টা করবো।’