X
সোমবার, ২০ মে ২০২৪
৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর দেওয়া আল্টিমেটামের কাউন্টডাউন চলছে

উদিসা ইসলাম
১৭ জুন ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ১৭ জুন ২০২০, ০৮:০০

ফিরে দেখা ১৯৭২

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ১৭ জুনের ঘটনা।)

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত সমাজবিরোধী ব্যক্তিরা ২২ জুনের মধ্যে সিধা পথে না এলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই ঘোষণার পর কেরোসিন তেল ও চিনির মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে এবং চালের দাম সামান্য কমেছে। বঙ্গবন্ধুর দেওয়া আল্টিমেটামের সময় শেষ হতে আর ৫ দিন বাকি আছে। ১৯৭২ সালের ১৭ জুন থেকে পত্রিকাগুলো এই বক্তব্যকে ধরে কাউন্টডাউন শুরু করে।

আমদানি করা কয়েকটি নিত্য ব্যবহার্য পণ্য মোটামুটি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে দৈনিক পূর্বদেশের ১৭ জুনের  প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অন্যান্য প্রায় সব দ্রব্যের মূল্য পূর্বের মতোই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে রয়ে গেছে। যদিও সতর্কবাণী দেওয়া হচ্ছে, সময়সীমা পার হতে আর মাত্র কয়েকদিন দিন বাকি। তবুও মুনাফাখোররা এখনও পথে আসেনি, ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র মজুত রেখেছেন। কোনও জায়গায় মজুত রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের নাকি গোপন আস্তানা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, সরবরাহের অভাবের জন্য দ্রব্যের আকাশচুম্বী মূল্য বৃদ্ধি ঘটেনি। একশ্রেণির ব্যবসায়ী জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বাড়িয়ে তুলেছে।’

১৯৭২ সালের ১৭ জুনের দৈনিক পূর্বদেশ ‘অপর একটি মহল থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, পুলিশ মজুত উদ্ধারের জন্য আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ না করলে শেষ পর্যন্ত মজুতদাররা হয়তো  গুদামজাত নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য বিনষ্ট করার পথ বেছে নেবে। এজন্য পুলিশ বাহিনী ও জনগণকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।’

খোলা হচ্ছে পৃথক পাট দফতর

সরকার পৃথকভাবে পাট দফতর প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভায় প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, পৃথক দফতর ও পাট ব্যাংক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের জনগণ বহুদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিল। উপনিবেশবাদী পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাদেশের জনগণের দাবির প্রতি সাড়া দেয়নি। দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ফসল পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি করে বাংলাদেশ বছরে ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে বলে সেসময় আশা করা হচ্ছিল।

জনস্বার্থবিরোধী ভূমিকা গ্রহণ করবে না আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও বেতার দফতরের মন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী নিপা’র সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিলুপ্তি মেনে নিতে রাজি আছে। কিন্তু জনগণের বিরোধী কোনও ভূমিকা গ্রহণ করবে না।’ তিনি নিপা আয়োজিত তৃতীয় জন-যোগাযোগ কোর্সের সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণকালে মন্ত্রী বলেন, ‘জনযোগাযোগের মূলকথা হচ্ছে আদান-প্রদান। সেটা নিশ্চিত করতে হলে প্রশাসন যন্ত্রকে জনগণের কাছে যেতে হবে। দেশের মানুষের খবর রাখতে হবে।’ তথ্যমন্ত্রী আরও  বলেন, ‘অতীতে আমাদের দেশে জনযোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল। একতরফা জনগণকে জোর করে বোঝানো হতো যে, সরকার ভালো।’ তিনি বলেন যে, ‘ওদের সরকারের গণবিরোধী ভূমিকার জন্যই পাকিস্তান ভেঙে গেছে। আমি আশ্বাস দিতে পারি যে, আমরা রাজনৈতিক বিলুপ্তি পছন্দ করবো, কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে কোনও ভূমিকা গ্রহণ করবো না।’

বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য

বাসসের খবরের বরাত দিয়ে ১৭ জুন দৈনিক পূর্বদেশ প্রকাশ করে— ‘বাংলাদেশ-নেপাল পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী, এই মর্মে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর শেষে ঢাকা ও নেপাল থেকে যুক্ত ইশতেহারে এ কথা বলা হয়েছে। ইশতেহারে উল্লেখ রয়েছে এবং  আরও বলা হয়েছে যে, যোগাযোগের ব্যবস্থা আরও বাড়বে।’

আরেকজন দালালের সশ্রম কারাদণ্ড

ঢাকার অন্যতম বিশেষ ট্রাইবুনাল ওবায়দুল কবীরকে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর দালাল বলে এদিন রায় দেন।  ট্রাইব্যুনাল এই আসামিকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়  মাস কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারক এন এ রহমান বলেন, ‘সরকার পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণে দেখা যায়, ওবায়দুল কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দখলদার বাহিনীর হাত জোরদার করেছে।’  ওবায়দুল কবীর বাংলাদেশ সরকারের দালাল আইনের অধীনে আনা অভিযোগের জবাবে বলেন, ‘তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় অপরাধের কাজ হয়নি। আসামিপক্ষের তিন জন সাক্ষী হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, ওবায়দুল কবীরের ওপর পাকিস্তানি বাহিনী জুলুম চালিয়েছিল এবং তিনি প্রাণের ভয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন।’ বিচারক রহমান বলেন, ‘এদের কারোরই কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এরা কেউ চাক্ষুষ সাক্ষী নয়।’

 

 



/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
রাইসি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন: জিএম কাদের
রাইসি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন: জিএম কাদের
ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
নোয়াখালীতে রূপালী ব্যাংকের উদ্যোগে স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
নোয়াখালীতে রূপালী ব্যাংকের উদ্যোগে স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
বৃক্ষ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে গবেষণা বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বৃক্ষ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে গবেষণা বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
রাইসির হেলিকপ্টারের অবস্থান ‘শনাক্ত’, সুসংবাদের প্রত্যাশা
রাইসির হেলিকপ্টারের অবস্থান ‘শনাক্ত’, সুসংবাদের প্রত্যাশা
ঋণ খেলাপের দায়ে স্ত্রী-ছেলেসহ স্টিল মিল মালিকের কারাদণ্ড
ঋণ খেলাপের দায়ে স্ত্রী-ছেলেসহ স্টিল মিল মালিকের কারাদণ্ড
হামজার পর দিয়াবাতেকে বাংলাদেশ দলে খেলানোর প্রক্রিয়া শুরু
হামজার পর দিয়াবাতেকে বাংলাদেশ দলে খেলানোর প্রক্রিয়া শুরু
জাপানিদের স্বাস্থ্যকর এই ৭ অভ্যাসের কথা জানতেন?
জাপানিদের স্বাস্থ্যকর এই ৭ অভ্যাসের কথা জানতেন?
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত