X
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সেই কিশোরীকে হস্তান্তরে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:২৭আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:৩৩

রাজধানীর নাম করা একটি স্কুলে পড়ছে কিশোরী। বিয়ের বয়সে পৌঁছতে এখনও তার দুই মাস বাকি। এরমধ্যেই তাকে জোর করে বিয়ে দেন মা-বাবা। কিশোরী কিছুতেই এ অন্যায় মেনে নিতে পারছিল না। ফলে বাধ্য হয়ে সে বিয়ের ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক দেয়। সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর আজিমপুর এলাকায়। স্বামীকে তালাক দেওয়ায় সাহসী এই কিশোরীকে তার বাবা বাড়িতে নিতে রাজি হননি। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে  তাকে পুলিশের সেফহোমে (উইমেন সাপোর্ট সেন্টার) রাখা হয়েছে। তবে   মেয়েটিকে হস্তান্তরের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ কর্মকর্তারা।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিনা মাহমুদা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের এখানে আসার পর থেকে মেয়েটি ভালো আছে। অন্য যেকোনও ভিকটিমের তুলনায় তাকে আলাদা যত্ন নেওয়া হচ্ছে। যেন সে মানসিকভাবে ভালো থাকে। তবে এখনও তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের  কোনও সিদ্ধান্ত  হয়নি। সে যতদিন আমাদের এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।’

উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,  ‘আমরা এখানে থাকা প্রত্যেকটি মেয়ের যত্ন করি। তাদের  মানসিক সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখি। এই কিশোরীটি যেহেতু একটা ঘটনার ভেতর দিয়ে এসেছে। তার প্রতিও আমাদের আলাদা যত্ন রয়েছে। আজ শুক্রবার হওয়ায় এখনও তার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন।’

এদিকে আজিমপুরে পরিবার নিয়ে থাকা কিশোরীর বাবা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আজ শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায়  তাকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গিয়ে মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসবো।’ মেয়েটির বাবা বলেন, ‘এটা আসলেই একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমার মেয়েকে আমি ফেরত চাই। ওর (কিশোরী) যেটা ভালো মনে হয়, ও সেটাই করবে।’  

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ওই কিশোরী জানায়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই তার বাবা তাকে কয়েকবার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রত্যেকবারই বিয়ের আয়োজন থেকে বিভিন্নভাবে নিজেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে সে। সর্বশেষ এই বিয়েতেও যখন রাজি হচ্ছিল না, ঠিক তখন বাবা তার বয়স বাড়িয়ে এফিডেভিট করেন।এফিডেভিটে তার বয়স উল্লেখ করা হয় ১৯ বছর। অনেক প্রতিবাদ করেও বিয়ে ভাঙতে পারেনি সে।

কিশোরী জানায়, গত ১৫ জানুয়ারি ৩৭তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এক এএসপি সঙ্গে তাকে জোর করে বিয়ে দেন মেয়েটির মা-বা। এক পর্যায়ে সে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলেও ততক্ষণে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি)  পুলিশের এএসপি আসার কথা তাকে ঘরে তুলে নিতে। বুধবার রাত থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করে কিশোরী। বৃহস্পতিবার স্বামী জোর করে তাকে মার্কেটে নিয়ে যান। ফেরার পথে সহযোগিতা চাওয়া বন্ধু ও সাংবাদিকদের তার বাসার সামনে পেয়ে যায় মেয়েটি।একইসঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) একজন প্রতিনিধি তাকে আইনি সহযোগিতা দিতে আসেন। বরসহ মেয়েটি যখন  বাসার নিচে উপস্থিত ঠিক, তখনই বন্ধুদের দেখে সে আবারও নিজের বাল্যবিয়ের প্রতিবাদ করে। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সেব জানায়, জোর করেই তাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে এই বিয়েতে রাজি নয়। তার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি।

পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় লালবাগ থানায় আশ্রয় নেয় মেয়েটি। সেখানে তার সম্মতিতে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এ সময় তার বাবা-মাকেও থানায় ডেকে আনে পুলিশ।

আরও পড়ুন:

জোর করে বিয়ে, তালাক নিয়েছে সাহসী কিশোরী

/এসএইচ/ এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি, বৃষ্টি হলেও কমবে না গরম
তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি, বৃষ্টি হলেও কমবে না গরম
জলবায়ুসহিষ্ণু কাঁচাবাজার নির্মাণের কাজ এগোলো কতদূর?
জলবায়ুসহিষ্ণু কাঁচাবাজার নির্মাণের কাজ এগোলো কতদূর?
ইসলামী ব্যাংক-ট্রান্সফাস্ট রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইন, বিজয়ীদের পুরস্কার দিলেন মনিরুল মওলা
ইসলামী ব্যাংক-ট্রান্সফাস্ট রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইন, বিজয়ীদের পুরস্কার দিলেন মনিরুল মওলা
ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের ছোড়া ১০টি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে দাবি রাশিয়ার
ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের ছোড়া ১০টি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে দাবি রাশিয়ার
সর্বাধিক পঠিত
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
নিজের বাসায় পরীক্ষা নিয়েছিলেন কর কর্মকর্তা!
নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি টাকা আত্মসাৎনিজের বাসায় পরীক্ষা নিয়েছিলেন কর কর্মকর্তা!
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
একীভূত হতে পারে কেউ পাস না করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
একীভূত হতে পারে কেউ পাস না করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল