ঢাকার অধস্তন আদালতে বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য রয়েছে ‘আইনগত তথ্য ও সেবা ডেস্ক’। কাঁচ ঘেরা দৃষ্টিনন্দন ডেস্ক থাকলেও সেবা প্রদানের কোনও কার্যক্রম সেখানে নেই। ডেস্কের জায়গায় হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।
আইনি সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর এই তথ্য সেবাকেন্দ্র উদ্বোধন করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ রেজাউল করিম। যেখানে সরকারি আইনগত সেবা সংক্রান্ত তথ্য, মামলা সংক্রান্ত তথ্য, আদালতের বিভিন্ন অফিস সংক্রান্ত তথ্য, আদালতের এজলাসের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য, ফৌজদারি মামলা বিষয়ক মৌলিক তথ্য সংক্রান্ত এবং ভিকটিমদের সহায়তায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সেবা সংক্রান্ত তথ্য ও সহযোগিতা পাওয়ার কথা ছিল।
এছাড়াও অন্যান্য প্যারা-লিগ্যাল অ্যাডভাইজরি সার্ভিস, আদালতে নারী ও শিশুদের বিশ্রামাগার, ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্য এবং সহযোগিতার জন্য জার্মান সংস্থা জিআইজেড ও লিগ্যাল এইড-এর তত্ত্বাবধানে আইনি সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যেও করা হয়েছিল এই ডেস্ক। উদ্বোধনের পর কিছুদিন সচল থাকলেও পরে বন্ধ হয়ে যায় সেবা কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নিচতলায় অবস্থিত আইনগত তথ্য ও সেবা ডেস্ক। সেখানে কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি। ডেস্কের চারপাশে ধুলোবালির স্তর জমে আছে। ভেতরে ভাঙা চেয়ার-টেবিলের বিভিন্ন অংশ পড়ে রয়েছে। সঙ্গে অনেকগুলো খালি প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের বস্তা ও বস্তাভর্তি ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনি লিফলেটসহ ময়লা-আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে।
আদালতে আসা মাহাতাব হোসেন নামের এক বিচারপ্রার্থী বলেন, ‘এখানে সেবা কেন্দ্র যে আছে সেটাইতো জানি না। লেখা দেখেছি তথ্য সেবা কেন্দ্র কিন্তু ভেতরে কেউ নাই। ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে।’
ঢাকা অধস্তন আদালতের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাশেই ডিসি অফিসে একটা তথ্যসেবা কেন্দ্র আছে, যেখানে সব পাওয়া যায়। কিন্তু সিএমএম আদালতে এমন কোনও সেবাকেন্দ্র নেই। যে একটা কেন্দ্র আছে তার কোনও কার্যক্রম নাই। যার ফলে আদালতে বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই আদালতে কোথায় কি আছে বিচার প্রার্থীর এসে খুঁজে পায় না। কোন কোর্ট কত তলায়, আইনজীবীরা কোথায় বসেন; এসব বিষয়ে কোনও নির্দেশনাও নেই। যার কারণে সাধারণ মানুষ দালাদের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে এই তথ্য সেবা পুনরায় চালু করা প্রয়োজন।
ঢাকার সিএমএম আদালতের নেজারত শাখার সহকারী নাজির আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সিএমএম ভবনের নিচতলায় যে সেবা কেন্দ্রটা আছে, এটা আমাদের তত্ত্বাবধানে নেই। এটা লিগ্যাল এইড-এর তত্ত্বাবধানে। উনারা আমাদের কাছে সেবা ডেস্ক-এর জন্য জায়গা চেয়েছিল, আমরা জায়গা দিয়েছি। উদ্বোধনের পর মাসখানের এটা চালু ছিল এরপর থেকে এভাবেই পড়ে আছে।
এই বিষয়ে জানতে লিগ্যাল এইড বাংলাদেশ, সিএমএম আদালত শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।