আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, শ্রমিকদের মজুরি বোর্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আসলে টাকা দেয় মালিক, যেটা আদায় করা বেশ কষ্টসাধ্য। সেটা সম্ভব করতে হলে শ্রমিকদের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় শাজাহান খান বলেন, ‘গার্মেন্টস মালিকরা কিন্তু একটা সংগঠনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে বিভক্ত। ২০১৩ সালে আমরা শ্রমিকদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। তাতে একটি ইতিবাচক ফল এসেছিল।’
শ্রমিকদের মধ্যে বিভিন্ন দলের যে বিভক্তি আছে তা দূর করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে শ্রমিকরা বিভিন্ন অঙ্কের বেতন পান। এটা ঠিক যে সে বেতনটাকে আমরা একটি স্কেলে নিয়ে আসতে পারিনি। তবে তা নিয়ে আসার সময় এখনও আছে।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সরকারের সঙ্গে অনেকবার আলোচনায় বসেছি, তাতে সফলতাও এসেছে। গার্মেন্টস সেক্টরে যে অস্থিরতাটা আগে ছিল, সেটা এখন আর নেই। আন্দোলন হবে স্বাভাবিক, কিন্তু সেটি অন্যায় নয়। সরকারের দায়িত্ব সেটাকে বিবেচনায় নিয়ে সমাধান করা।’
গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করাসহ আইবিসির অন্যান্য দাবিগুলো হলো– গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশন ও আবাসন ব্যবস্থা চালু করা; গার্মেন্টস শ্রমিকদের গ্রাচ্যুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা; মাতৃত্বকালীন সময়ে চাকরিচ্যুতি বন্ধ কর, আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা; নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা। শ্রমঘন এলাকায় শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণ কর; আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন; গার্মেন্টসে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সব বাধা অপসারণ করা; শ্রম দফতরের দুর্নীতি ও দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করা; আইএলও’র রোড ম্যাপের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন; গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ডাটাবেজ তৈরিসহ আইডি কার্ড দেওয়া; আইএলও কনভেনশন-১৯০ ও ১২১ অনুসমর্থন করা; ইমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমকে পাইলট প্রকল্প থেকে সার্বজনীন করা; কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী বন্ধ ও অপরাধীদের শান্তি নিশ্চিত করা এবং কথায় কথায় চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের শ্রম আইন মোতাবেক পাওনা পরিশোধে সব হয়রানী বন্ধ করা।
আইবিসির সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়কারী শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পরিচালক ড. খন্দকার মোয়াজ্জেম।