X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা পড়তে ও আবৃত্তি করতে ছন্দ জানা জরুরি: আসাদুজ্জামান নুর

ঢাবি প্রতিনিধি
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪২আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪২

ছন্দ না বুঝে কবিতা আবৃত্তি করা দুরূহ। কবিতা পড়তে ও আবৃত্তি করতে ছন্দ জানা জরুরি। এ জন্য কবি কামাল চৌধুরীর ‘কবিতার অন্বেষণ, কবিতার কৌশল’ বইটি পড়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘কবিতার অন্বেষণ, কবিতার কৌশল’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব ও বই আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমি কবিতা পড়ি ও আবৃত্তি করি। আবৃত্তি করতে গেলে ছন্দ মেনেই করতে হয়। ছন্দ না বুঝে কবিতা আবৃত্তি করা দুরূহ। কবিতা যারা আবৃত্তি বা পড়তে চান, বইটি তাদের অবশ্যই পড়া দরকার। এটা ঠিক, কবিরা যখন কবিতা পাঠ করেন, তখন নিজেই ছন্দে ভুল করেন। তবে কবি ও আবৃত্তিকার দুটি আলাদা পেশা। সেখানে নিজ নিজ জায়গায় নিজেদের অবস্থান রয়েছে, সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন, বইটি আরও আগে বের হলে বেশি লাভ হতো। আমার কয়েক দিনের মধ্যে বইটি পড়ে ফেলতে হবে। এখানে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা আগে আমার জানা ছিল না। সেগুলো আগামী দিনে আবৃত্তি করতে আমার কাজে লাগবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, কবিতা একটি নিরন্তর যাত্রা। আর সেই যাত্রায় আমরা যারা শরিক হতে চাই, আমাদের ফতুর হলে চলবে না, চতুর হতে হবে। কবিতা লেখার পাশাপাশি কামাল চৌধুরী আর যেসব কাজ করেছেন, সেগুলোর দিকে তাকাতে পারি, তিনি প্রশাসনিক সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত গিয়েছেন। বাংলা একাডেমির কার্যাবলিতে অবদান রেখেছেন। বাংলা একাডেমি নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা আছে, বাংলা একাডেমি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কামাল চৌধুরী আমাদের ভুল ধরিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা একাডেমি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

কবি কামাল চৌধুরী বলেন, আমি অনেক দিন ধরে কবি নুরুল হুদাকে একটি বই উৎসর্গ করার জন্য তক্কেতক্কে ছিলাম। কিন্তু তার আগেই তিনি আমাকে বই উৎসর্গ করে ফেলেছেন। আজ আমি এ বইটি তাকে উৎসর্গ করলাম। ঋণ শোধ হবে না, ঋণ স্বীকারের অংশ হিসেবে এটি।

বইটি লেখার গল্প জানিয়ে কবি কামাল চৌধুরী বলেন, আমি যখন পার্বত্য অঞ্চলে চাকরি করি, তখন সেখানে সার্কিট হাউসে আলোচনা চলছিল। সেখানে একজন বললো, এই যে কামাল কবিতা লেখে। কিন্তু এখনকার আধুনিক কবিতা লিখতে আর তেমন কোনও কষ্ট হয় না। একটি পত্রিকা নানা জায়গা থেকে কেটে জোড়া দিলেই কবিতা হয়েছে যায়। আমাদের অধিকাংশ পাঠকেরই এই ধারণা। আমাদের কবিরা অনেকেই দাদাবাদী কবি। তারা টেবিল, খাতা, কলম আর ছুরি-কাঁচি নিয়ে বসে কবিতা লেখেন। ফলে তারা নিজের কবিতা নিজেই ব্যাখ্যা করতে পারেন না। আমার নিজের কবিতা ব্যাখ্যা করতে চেয়েছি। আমার নিজের কবিতা ব্যাখ্যার অংশই এ বই।

তিনি আরও বলেন, ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ের জন্য এবং ছান্দসিক লেখার জন্য আমার মনে হয়েছে এ রকম একটি বই থাকা প্রয়োজন। সেই জায়গায় থেকে এবং বইটি লিখতে সময়ের দরকার হয়, কারণ অনেক বই পড়তে হয়। সেই কাজটি আমি করোনাকালে করেছি। এ বইটি প্রকাশ করার জন্য সময় একটু বেশি লেগেছে।

মুখ্য আলোচক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবি শামীম রেজা বলেন, আজ যাকে ঘিরে অনুষ্ঠান, তিনি আপাদমস্তক একজন কবি। তিনি ‘মিছিলের সমান বয়সী’ কাব্য প্রকাশ করেছেন। তার আপাদমস্তক কবি সত্তার কারণেই হয়তো তিনি ছাত্র অবস্থায় আমাদের এমন কবিতা উপহার দিয়েছেন।

এ সময় তিনি আরও বলেন, যারা কবিতাচর্চা করতে চান, তার কাছে বইটি অবশ্য-পাঠ্য। বইটিতে আটটি অধ্যায়ে তিনি সুনিপুণভাবে সাজিয়েছে। তিনি এই বইয়ে যে উপমার কথা বলছেন, রূপকের কথা বলছেন; তিনি যে প্রতিবাদী আন্দোলনের কথা বলছেন, সেখানে নোয়াম চমস্কির কথার তৃতীয় মাত্রার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ নিয়ে আমার কথা হলো, তিনি সেখানে এই ভার্চুয়াল সময়ে কবিতা কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে লিখবে। যত ব্যস্ততাই থাক না কেন, তিনি লিখবেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, কবি কামাল হোসেন কবিতা লেখার সময় তার পাশে আমার কয়েকবার থাকার সুযোগ হয়েছে। তিনি একটি শব্দ নিয়ে যে কতবার ভাবেন, তা আমি দেখেছি এবং তার ছন্দজ্ঞান অত্যন্ত প্রখর। এগিয়ে যান কামাল হোসেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে কবি জাহিদ সোহাগ বলেন, সুনীল গাভাস্কার যখন ১০ হাজার রান পূর্ণ করলেন, তখন এক সাক্ষাৎকারে তাকে বলা হলো, আগামীতে কী করবেন? তিনি তখন দূরে স্কোরবোর্ড দেখিয়ে বললেন, ওখানে তো দুটি শূন্য থাকবে, সেই শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে। কবি কামাল চৌধুরী সেই শূন্য থেকে শুরু করে আমাদের কবিতার মহাদেশে নিয়ে এসেছেন। এ জন্য কবি কামাল চৌধুরীকে ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন কবি সাইমন জাকারিয়া, কবি জাকির জাফরান, কবি দিলারা হাফিজ, কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল, কবি মাসুদুজ্জামান, কবি ও অধ্যাপক খালেদ হোসাইন ও কবি-সম্পাদক নাসরি আহমেদ প্রমুখ।

এ ছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কবি ফরিদ কবির, কবি তারিক সুজাত, কবি সরকার আমিন, কবি জাকির জাফরান, কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ ও কবি স্নিগ্ধা বাউল। কবিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান প্রাবন্ধিক রাজিব সরকারসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠান শেষে কবি বক্তরা তাকে ফুল দিয়ে জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান।

/এনএআর/
সম্পর্কিত
রাজনীতি ঠিক না হলে অর্থনীতি ঠিক হবে না: সালেহউদ্দিন আহমেদ
ড. মাহবুব উল্লাহর ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন 
ভুটানি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
সর্বশেষ খবর
বালুবাহী বলগেট থেকে নদীতে পড়ে শ্রমিক নিখোঁজ
বালুবাহী বলগেট থেকে নদীতে পড়ে শ্রমিক নিখোঁজ
পিনাকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র, মুশফিককে অব্যাহতি
পিনাকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র, মুশফিককে অব্যাহতি
৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ
৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস
সর্বাধিক পঠিত
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে