সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য কোটা বাতিলে হাইকোর্টের আদেশকে সংবিধানবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৯ জুন) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে তারা এ কথা বলেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; চাকরিতে কোটা, মানি না মানবো না; হাইকোর্টের রায়, মানি না মানবো না; কোটা পদ্ধতি কোটা পদ্ধতি, মানি না মানবো না; কোটা না মেধা, মেধা মেধা স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়ের আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়ন করে কোটা বাতিল করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট সেই পরিপত্র বাতিলের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যয়ে আঘাত করেছেন। বঙ্গবন্ধু যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, পরিপত্র বাতিলের মাধ্যমে তাকে অবমাননা করেছেন হাইকোর্ট। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই রায় মানি না।’
ঢাবি শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ বলেন, ‘কোটা প্রথা সংবিধানবিরোধী, আমরা সংবিধানের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি না। আমরা হাইকোর্টের এই বৈষম্যের রায় মানি না। আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা রক্ত দিয়ে হলেও তাদের দাবি আদায় করে নিয়েছে। আমাদের ছাত্র সমাজ এই দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। তারা দাবি আদায়ে প্রস্তুত।’
সাইফুল বলেন, ‘হাইকোর্টের এই রায় আমাদের সাধারণ ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। আমাদের দাবি একটাই, কোটা প্রথা বাতিল করতে হবে।’
আন্দোলনকারীরা জানান, আজ সারা দেশে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১১টায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১টায়, বিএম কলেজে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে, ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টায় আন্দোলন করে।
২০১৮ সালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা প্রথা বাতিল করেন। ওই বছরের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কোটা বাতিলে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের একদিন পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে।
বুধবার (৫ জুন) কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন...
কোটা কি পুরোপুরি বাতিল করা যায়?
কোটা বাতিল, পরিষ্কার কথা: প্রধানমন্ত্রী
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ: হাইকোর্ট
‘কোটা বাতিলের জন্য প্রয়োজনে আবার রক্ত দেবো’