রাজধানীর বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া একেএম মনজিল হক হত্যা মামলায় সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি ও ভাই একেএম ইয়াসিন হকসহ ছয় জনের পক্ষে যুক্তিতর্কের শুনানির তারিখ পিছিয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে মামলাটিতে আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোটা আন্দোলন চলমান থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে আসামিদের আদালতে হাজির করেননি। এ জন্য আদালত আগামী ২৩ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
গত ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। ওইদিন সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
এ নিয়ে মামলাটিতে ৪২ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন– সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন, মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া, রবিউল ইসলাম সিয়াম ও সিমান্ত হোসেন তাকবীর। মাহফুজুল ইসলাম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আসামিদের মধ্যে ইয়াসিন ও সিয়াম কারাগারে। সিমান্ত হোসেন তাকবীর জামিনের। অপর তিন আসামি শুরু থেকে পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন মনজিল। হত্যার পর চাচা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে উঠে আসে মনজিল হত্যার মূলহোতা সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি, সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন ও সৎ ভাই একেএম ইয়াসিন হক এবং মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া। সম্পত্তির লোভে তারা মনজিলকে হত্যা করে। ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক মো. শামসুদ্দিন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী ফারুক ও মনজিলের বাবা দুই ভাই। তারা একই সঙ্গে গার্মেন্টসের ব্যবসা করতেন। শান্তিনগর বাজারের পেছনে মনজিল ও ফারুকের ছেলেদের যৌথ নামে একটি ফ্ল্যাট ছিল। কিন্তু ফ্ল্যাটটি ছেলেদের দিয়ে দলিল করিয়ে বিক্রি করে দেয় ফারুক। এ নিয়ে মনজিলের বাবার সঙ্গে ফারুকের দ্বন্দ্ব ছিল। নিহতের বাবার মারা যাওয়ার পর সেই ক্ষোভ মনজিলের ওপর ছিল ফরুকের। ওই ক্ষোভ থেকেই মনজিলকে হত্যার পরিকল্পনায় ইয়াসিনের সঙ্গে যোগ দেয় চাচা ফারুক।