X
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শাহজালালের গ্রিন চ্যানেলে চালু হয়েছে আরও দুটি স্ক্যানার

ইমরান আলী
১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:০৭আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৫৬

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করতে আরও দুটি স্ক্যানার চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি যেমন অনেকটাই লাঘব হয়েছে, তেমনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুসংহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।

যাত্রী ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩৪টি বিদেশি এয়ারলাইনস বিভিন্ন দেশের ৫২টি বিভিন্ন রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন ফ্লাইট ওঠানামা করছে। অ্যারাইভার বা ‘আগমনী’ বেল্টে (বিমানে করে এসে শাহজালালে নামার পরের প্রবেশ পথ) তিনটি স্ক্যানার ছিল। একসঙ্গে অনেক যাত্রী এলে ভোগান্তি হতো। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় যাত্রীরা দ্রুত ব্যাগ পেলেও আটকে থাকতে হতো কাস্টম চেকিং এলাকায়। চেকিংয়ের পেছনে যাত্রীদের ৩০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত চলে যেত। পাশাপাশি অনেক লাগেজ স্ক্যান ছাড়াই বের হয়ে যেত। যথাযথভাবে তল্লাশি না হওয়ায় শুল্কায়ন ও ট্যাক্সযোগ্য অনেক পণ্য, এমনকি স্বর্ণের অবৈধ চালানও দেশে প্রবেশের সুযোগ ছিল। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব যেমন হারিয়েছে, তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও ছিল।

তবে ‘বহির্গমন’ বা ডিপার্চার বেল্টে যাত্রীদের স্ক্যানিংয়ের কোনও সংকট ছিল না। শতভাগ স্ক্যান করেই পার হতে হয় সেখানে।

বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, গত মাসে বিমানবন্দরে আরও দুটি স্ক্যানার লাগানো হয়েছে। এগুলো শতভাগ কাজ শুরু করেছে। ফলে এখন সব যাত্রীর লাগেজ শতভাগ চেক হয়েই বের হচ্ছে।

তারা আরও জানান, থার্ড টার্মিনালে বেল্টের সঙ্গেই স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। পৃথকভাবে লাগেজ আর স্ক্যানারে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না সেখানে। একইভাবে টার্মিনাল ১ ও ২ বেল্টে স্ক্যানার লাগালে যাত্রীদের আরও সুবিধা হতো।

বিমানবন্দর কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার আল-আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা। তারা কোনোভাবেই যেন নাজেহাল  না হন, ভোগান্তির শিকার না হন, তার জন্য কাজ করা। এই লক্ষ্যে আমরা আরও দুটি স্ক্যানার স্থাপন করেছি। প্রথম গ্রিন চ্যানেলে একটি, দ্বিতীয় চ্যানেলে আরেকটি বসানো হয়েছে। এর ফলে প্রথম গ্রিন চ্যানেলের সঙ্গে আরেকটি যুক্ত হওয়ায় সেখানে তিনটি স্ক্যানার আছে এখন। অপরটি দ্বিতীয় চ্যানেলের সঙ্গে মিলে সেখানে মোট দুটি। সব মিলিয়ে পাঁচটি স্ক্যানার সচল রয়েছে। আগে যেমন স্ক্যানার স্বল্পতায় অনেক লাগেজ চেক ছাড়া বের হওয়ার সুযোগ পেতো, এখন সেটি আর নেই।

কাস্টমস সূত্র জানায়, আগমনী বেল্ট ১ থেকে ৪ নম্বরের জন্য ৩টি এবং ৫ থেকে ৮ নম্বরের বেল্টের জন্য দুটি স্ক্যানার কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আল-আমিন বলেন, স্ক্যানিং কাজে আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করতে লাগানো নতুন স্ক্যানার

বিমানবন্দরের বহির্গমন বেল্টের শুরুতেই যাত্রীদের জন্য ৬টি গেট রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি খোলা থাকে। ২ ও ৫ নম্বর দুটি গেট বন্ধ থাকে। ৩, ৪ ও ৬ সবসময় খোলা থাকে। ৬ নম্বর গেট দিয়ে ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সিআইপি যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানিং করা হয়। এই ৬টি গেট দিয়েই লাগেজ স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বহির্গমন বেল্টের পরের ধাপে বোর্ডিং পাস করানোর জন্য ৫টি চেক-ইন রো আছে। এ নম্বরের রোতে এমিরেটস; বি নম্বর রোতে কাতার, সৌদিসহ অন্যান্য, সি নম্বরে ইউনাইটেড এয়ার, ডি নম্বরে বাংলাদেশ বিমান এবং ই নম্বরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের রো রয়েছে। এসব রোতেও রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এরপর যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের জন্য রয়েছে দুটি স্থান। এছাড়া ট্রানজিট ও ক্রুদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে আরেকটি, হজ মৌসুমে এটিও ইমিগ্রেশন কাজে ব্যবহার করা করা হয়।

সর্বশেষ ধাপে উড়োজাহাজে ওঠার জন্য বোর্ডিং ব্রিজ রয়েছে ৮টি। এগুলো ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, বর্ধিত ১ এবং বর্ধিত ১৬। যাত্রীরা এর মাধ্যমে উড়োজাহাজে ওঠেন।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের সমন্বিত চেষ্টা হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দর নিয়ে যাত্রীদের যেন কোনও অভিযোগ না থাকে। সেই চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি।

শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সাবেক এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শুরু থেকে নিরাপত্তার ঘাটতি নিয়ে সবসময় কর্তৃপক্ষকে জানাতাম। সেগুলো পর্যায়ক্রমে পূরণ হচ্ছে এটা ভালো দিক। এরপরও নিরাপত্তার বিভিন্ন ঘাটতি রয়েছে। ছোটখাটো এসব বিষয় ক্রমেই পূরণ হবে বলে আশা করছি।

সম্প্রতি ওমান থেকে আসা যাত্রী মাদারীপুরের সোলাইমান বলেন, ফ্লাইট ল্যান্ড করার পরই লাগেজ বেল্টে চলে এলো। একইসঙ্গে বেল্ট থেকে লাগেজ নিয়ে কাস্টমসের স্ক্যান করে সহজেই বের হয়ে গেলাম। আগে বেল্টে আসতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যেত। এরপর সেখান থেকে নিয়ে লাগেজ স্ক্যানারে দিতে লাইন দাঁড়াতে হতো। এখন সেগুলো নেই। কোনও ঝামেলা ছাড়াই সব কাজ হচ্ছে।

ওমান থেকে আসা আরেক যাত্রী শরীয়তপুরের আসাদ জানান, লাগেজ ২০ মিনিটের মধ্যে চলে এসেছে। গ্রিন চ্যানেলে এখন তিনটি স্ক্যানার। বড় কোনও লাইনও ছিল না। দ্রুত বের হয়ে এসেছি।

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
শাহজালালে করোনা প্রতিরোধে সতর্কতানন-টাচ পদ্ধতিতে চলছে যাত্রীদের দেহের তাপমাত্রা নির্ণয়
প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ কয়েকটি স্থানে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা
তিন বিমানবন্দর ঘিরে স্বর্ণ চোরাচালানের দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেট
সর্বশেষ খবর
আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্তের মুহূর্ত
আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্তের মুহূর্ত
আহমেদাদের বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্যগুলো হৃদয় বিদারক: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
আহমেদাদের বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্যগুলো হৃদয় বিদারক: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
কোহলি-রোহিতকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে অস্ট্রেলিয়া
কোহলি-রোহিতকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে অস্ট্রেলিয়া
আঠারোর আগেই দেশের অর্ধেক কিশোরীর বিয়ে
আঠারোর আগেই দেশের অর্ধেক কিশোরীর বিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অস্বীকৃতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অস্বীকৃতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ইউরোপীয় নাগরিক সমাজের চিঠি
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ইউরোপীয় নাগরিক সমাজের চিঠি
বাংলাদে‌শের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করলো যুক্তরাজ্য
ড. ইউনূসের ব্রিটেন সফরবাংলাদে‌শের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করলো যুক্তরাজ্য
জেলা জামায়াত সেক্রেটারির পদত্যাগ
জেলা জামায়াত সেক্রেটারির পদত্যাগ
পারমাণবিক আলোচনা ভেস্তে গেলে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার হুমকি ইরানের
পারমাণবিক আলোচনা ভেস্তে গেলে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার হুমকি ইরানের