রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির লেকপাড়ে ৬ মাসের শিশু আমেনার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ। পুলিশের বলছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা হওয়ায় শিশুটির মা ফাতেমা বেগম ও তার প্রেমিক মো. জাফর এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এ বিষয়ে ফাতেমা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পল্লবী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ‘গত ৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে উত্তরা দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ১২৪নং পিলার সংলগ্ন লেকপাড় থেকে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ তার গলায় সন্দেহজনক আঘাতের দাগ দেখতে পায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তে নেমে শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করে। এর পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার গভীর রাতে পল্লবী এলাকা থেকে ফাতেমা বেগমকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ফাতেমা জানিয়েছে, জাফর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ওই রাতেই জাফরকে গ্রেফতার করে পল্লবী থানা পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার দুজনেই বিবাহিত। তারা পল্লবী এলাকায় বসবাস করতো। জাফর (৩৬) গার্মেন্টসকর্মী। শিশুটির মা ফাতেমা (২৫) আগে একই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফাতেমার স্বামী গ্রিলের মেকানিক, কাজের সুবাদে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন। এ সুযোগে নিয়মিত বাসায় যাতায়াত করতেন জাফর। একদিন রাতে ফাতেমার বাসায় গেলে ছয় মাসের শিশুর কান্নাকাটিতে তাদের শারীরিক সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটে। যার কারণে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।’
জিজ্ঞাসাবাদে ফাতেমা পুলিশকে জানিয়েছে, গত ৫ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৮টায় জাফর ফাতেমার বাসায় আসে। শিশুর কান্নাকাটিতে তাদের শারীরিক সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটায় প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর পর অচেতন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বালিশ চাপা দিয়ে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে বিছানার চাদর দিয়ে মরদেহ মুড়িয়ে কাপড়ের শপিং ব্যাগে করে নিয়ে মেট্রোরেলের একটি পিলারের কাছে ফেলে আসে।
গ্রেফতার জাফর ছয়দিনের রিমান্ডে পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ডিসি।