পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটিয়ে স্বরূপে ফিরতে শুরু করছে ব্যস্তনগরী ঢাকা। প্রথম কর্মদিবসের দিন রবিবারও (৬ এপ্রিল) রাজধানীতে ফিরেছেন অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ। আর নগরবাসীর এই আসা যাওয়ার ঢল শেষ হওয়ায় রাজধানীর প্রধান নদী বন্দর সদরঘাট নৌ টার্মিনালের ব্যবসায়ীদের মুখে আবার নেমে এসেছে মলিনতার ছাপ।
সরজমিনে সদরঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গতকালও যেখানে মানুষের পদচারণায় পূর্ণ ছিল সেখানে আজ ব্যস্ততার লেশ মাত্র নেই। বিভিন্ন রুটের লঞ্চ স্বাভাবিক নিয়মে ছেড়ে যাচ্ছে ও আসছে। লঞ্চের স্টাফদের মধ্যেও নেই কর্মচাঞ্চল্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়কপথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকেই নৌপথের যাত্রীর ভাটা তৈরি হয় সদরঘাট থেকে। এরপর থেকে ঈদের আগের দুইদিন ও ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার এক-দুইদিন যাত্রীর চাপ থাকে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া নিয়মিত সময়ে যাত্রীর চাপ থাকে না বললেই চলে। ফলে কমেছে লঞ্চের সংখ্যা, প্রভাব পড়েছে টার্মিনাল ও ঘাট এলাকার খুচরা ব্যবসাতেও।
ঘাট এালাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের ব্যবসা নির্ভর করে সদরঘাটের যাত্রীদের ওপর। ফলে ঈদের কয়েকদিন ধরে তাদের ব্যবসা থাকে তুঙ্গে। ঈদ শেষ হওয়ায় তাই যাত্রী সংকটের প্রভাব পড়েছে তাদের ব্যবসাতেও।
পন্টুনে ফল বিক্রেতা সাগর বলেন, ‘আজ তো যাত্রী হয়নি। ঈদ শেষ, আমাদের ব্যবসাও শেষ। ঈদের আগের দুই দিন প্রায় দেড়-দুই মণ করে ফল বিক্রি করছি। গতকালও (শনিবার) ব্যবসা হইছে। আজ যাত্রী নেই, আধা মণও বিক্রি হয়নি আজ।’
পদ্মাসেতু হওয়ার আগের ঈদের স্মৃতি হাতড়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে ঈদের সময় দিনে ছয়-সাত মণও ফল বিক্রি করতাম। এখন যাত্রী নেই, তাই বিক্রিবাট্টাও কম। এছাড়া ঘাটে পুলিশ বসতে দেয় না আগের মতো।’
টার্মিনালের বাইরে পোশাকের দোকান তৌহিদ হাসানের। তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা ঘাটে যাত্রীর ওপর নির্ভর করে। এই কয়দিন যাত্রী ছিল, ভালো ব্যবসা হয়েছে। সেতু হওয়ার আগে আমাদের ব্যবসা ভালো ছিল। অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। শুধু ঈদ আসলেই আমাদের ব্যবসা ভালো হয়।’
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, এদিন রাত ৮ পর্যন্ত বিভিন্ন রুট থেকে ১০০টি লঞ্চ পন্টুনে নোঙর করেছে। আর ৭০টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ-র ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, ‘সরকারি ছুটি শেষ হওয়ায় ঈদ যাত্রার চাপ শেষ হয়েছে। আজ সকালে চাঁদপুর, ইলিশা রুটে যাত্রীর চাপ ছিল শুধু। এছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে লঞ্চ চলাচল করছে।’