X
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
৩ আষাঢ় ১৪৩২

মানব পাচারকারীর কাছে জিম্মি ছেলেকে ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি 

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট 
২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:২৮আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:২৮

লিবিয়ায় মানব পাচারকারীর কাছে এক বছর ধরে জিম্মি মো. রবিন ইসলামকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। রবিবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী মো. রবিন ইসলামের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ১০ তারিখ বেলা ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। আত্মীয় হিসেবে নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমার ছোট ছেলে মো. রবিনকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। আমরা পরিচিত লোক না থাকা, টাকা পয়সা না থাকা ইত্যাদি বলে প্রস্তাবটি নিতে অস্বীকৃতি জানাই। তখন সাধনা বেগম বলেন, তার নিজের ছেলেকে মনির হোসেন ইতালি পাঠিয়েছে। আমি বলি মনিরকে তো আমরা চিনি না। তখন সে সঙ্গে সঙ্গে মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামকে ফোন করে কথা বলে। এর এক সপ্তাহ পরে মনির ও দিনা আমাদের বাড়ি আসে। তখন মনিরের সঙ্গে ইতালি পাঠানোর জন্য ১৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়।

তিনি বলেন, কিছু দিন পর টাকা অল্প সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনাসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসে। এ সময় আমার ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তখন দিনা ও দালাল মনির বলেন, রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালি যাবে। চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে রবিনের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে তাকে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার কুঠুরিতে আটকে রাখে। আটকাবস্থায় রবিনকে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতন চলাকালীন সময়ই তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে জানায় দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য। 

তিনি বলেন, এ কথা জানার পর আমরা মনির ও সাধুনীকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের বাবা কালাম হাওলাদার, স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধুনীর মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। এছাড়াও পরবর্তী সময়ে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এত টাকা দেয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা এই মানব পাচারকারীর রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। প্রায় এক বছর ধরে ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ছেলের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বাসি এবং দফতরে যোগাযোগ করলে কোনও সহায়তা পাইনি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।  এই অবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বলতে চাই— আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে রবিনের পরিবারের সদস্য ছাড়াও স্কুলের শিক্ষকেরা উপস্থিতি ছিলেন।

/এএজে/এমকেএইচ/
সম্পর্কিত
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৫৮ বাংলাদেশি
বিসিএসে চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩৪ করাসহ ৪ দাবি
চাঁদা না পেয়ে হামলার অভিযোগ, ‘বিএনপি নেতার’ বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
সর্বশেষ খবর
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদেশি সিগারেটসহ দুজন গ্রেফতার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদেশি সিগারেটসহ দুজন গ্রেফতার
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৫৮ বাংলাদেশি
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৫৮ বাংলাদেশি
শিক্ষাগুরুর মর্যাদার গল্পে প্রশংসিত ‘সম্মান’
শিক্ষাগুরুর মর্যাদার গল্পে প্রশংসিত ‘সম্মান’
যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সংবাদের প্রধান উৎস
যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সংবাদের প্রধান উৎস
সর্বাধিক পঠিত
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল