দুই দফা দাবিতে টানা ১৬ দিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় এবার আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (১৩ জুন) বিকাল ৪টায় একই স্থানে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করছেন তারা। সমাবেশে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেবেন।
প্রতিদিনের ধারাবাহিকতায় বুধবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল ৩টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দেড় শতাধিক কর্মী নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) কর্মীরা দুটি দাবিতে আন্দোলন করছেন— পদ সৃজন করে তাদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর এবং কর্তনকৃত বেতন-ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঈদুল আজহার আগেই, গত ২৮ মে থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এমনকি ঈদুল আজহার দিন (৭ জুন) এবং পরদিন (৮ জুন) রবিবারও কর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এরও আগে, গত ১ জুন দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় এবং শেষ বিকালে জোর করে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের একজন আখতার জাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় অর্ধমাস পার হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আশ্বাস মেলেনি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনের পরবর্তী ধাপে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। এর অংশ হিসেবে কাল নাগরিক সমাবেশ ডাকা হয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করবেন।’
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে চাকরি স্থায়ী করার প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে প্রতি মাসে কর্মকর্তাদের বেতন থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং সহকারীদের বেতন থেকে ১ হাজার ৩৯০ টাকা করে কেটে নিচ্ছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় তারা হতাশ।
চাকরিতে প্রবেশের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তারা জানান, অন্যান্য সরকারি চাকরির মতো নিয়মিত পরীক্ষা ও বাছাইয়ের মাধ্যমে তারা ২০১৮ সালের নভেম্বরে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
বর্তমানে দেশের ৪৯২টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৯৬৮ জন কর্মী মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। এর মধ্যে প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে একজন তথ্যসেবা কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড), দুজন সহকারী (১৬তম গ্রেড) এবং একজন অফিস সহায়ক (২০তম গ্রেড) নিয়োজিত রয়েছেন। এই কর্মীরা তৃণমূল নারীদের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, আইন, জেন্ডার, ব্যবসা, পরিবার পরিকল্পনা ও সাইবার সুরক্ষা—এই আটটি বিষয়ে তথ্য ও পরামর্শসেবা দিয়ে আসছেন।