X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২
সাক্ষাৎকারে ছাত্র ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ

স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারবে না

আবিদ হাসান
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৩৪আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫৮

ডিজিটাল বাংলাদেশের নির্মাণপর্বের পর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরবর্তী ভিশন হিসেবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ মনে করেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার জনগণের কাছে কী প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন, তা বিবেচ্য। তার মতে, ‘দেশের মানুষ ভোটাধিকার চায়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চায়, গণতান্ত্রিক দেশে বাস করতে চায়; তথাকথিত স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি যার কোনটাই নিশ্চিত করতে পারবে না।’ বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৈকত আরিফ এ মনোভাব প্রকাশ করেন।

আলাপে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্ররাজনীতির পরিবেশ, প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা এবং ছাত্র রাজনীতির প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাগ্রহ, ডাকসু নির্বাচনসহ নানা প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন।

বাংলা ট্রিবিউন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজে দীর্ঘদিন ধরেই পড়াশোনা করছেন আপনি। এখন একটি ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থানের পরিবেশ কেমন দেখছেন? আর এ বিষয়ে ক্যাম্পাস প্রশাসনের ভূমিকাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

সৈকত আরিফ: বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থানের পরিবেশ নেই। ক্যাম্পাসে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন একক কর্তৃত্ব কায়েম করেছে। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী শাসন যেমন সমস্ত বিরোধিতাকে সমূলে উৎপাটন করতে চাচ্ছে, তারই প্রক্রিয়াতে ক্যাম্পাসে বিরোধী ছাত্রসংগঠনগুলো আর কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না। যারাও কিছুটা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন তাদেরও প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি, হামলা-মামলার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নেওয়া দরকার। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরং ক্যাম্পাস যাতে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের দখলে থাকে তার সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদের নিয়োগে যেহেতু সরকার প্রধানের ভূমিকা মুখ্য থাকে সে কারণেই ভাইস-চ্যান্সেলর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে পারেন না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আন্তরিকভাবে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে চায় তা অবশ্যই সম্ভব। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সময় অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি হলেও এতে ক্যাম্পাসে কিছুটা সহবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছিল। ফলে ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে প্রশাসন যথাযথ উদ্যোগ নিলে সেটা সম্ভব। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা চায় না। প্রশাসনের এই গাফলতির কারণে সাংবিধানিক অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা উচিত। অনেকেই বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহবস্থান কেবলই অতীত স্মৃতি। আমি সেটা না বলে বরং প্রশাসন সহাবস্থান চায় না বলতেই বেশি আগ্রহী।

দলীয় কার্যক্রমে সৈকত আরিফ

বাংলা ট্রিবিউন: বেশ কয়েক দশক ধরেই ছাত্রসমাজের অধিকাংশই ‘আই হেইট পলিটিক্স’ ধারণা লালন করেন। একটি ছাত্রসংগঠনের নেতা হিসেবে আপনি কী মনে করেন, তারা কেন রাজনীতি বিমুখ হচ্ছেন?

সৈকত আরিফ: রাজনীতি মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে চাইলেও কেউ রাজনীতিকে ঘৃণা করে রাজনীতির কবল থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন না। আর ছাত্ররা কোন রাজনীতিকে ঘৃণা করে? গণরুম-গেস্টরুমে ছাত্রদের নির্যাতন করা, কথা বলতে না দেওয়া, ক্যাম্পাসে ত্রাস তৈরি করাকে ছাত্ররা ঘৃণা করেন। তারা মনে করেন, এগুলো যদি না থাকে তাহলে তাদের জীবন আরও নিরাপদ হবে। আমিও এর সঙ্গে একমত। আমিও চাই না ক্যাম্পাসে গণরুম-গেস্টরুমে ছাত্ররা নির্যাতিত হোক, তাদের জীবন অনিরাপদ হোক। কিন্তু এটাও মনে করি, এগুলো যারা করেন তারা কোন ক্ষমতার বলে করেন? মূলত রাজনৈতিক ক্ষমতার বলেই তারা এই ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারেন। ফলে এর বিপরীতে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হতে না পারলে এই নিপীড়ন আরও দীর্ঘমেয়াদী হবে। রাজনীতিকে ঘৃণা করে আমরা আমাদের জীবনকে নিরাপদ রাখতে পারবো না। আমাদের পরিণতি হবে আবরারের মতো, হাফিজের মতো কিংবা এখলাসের মতো।

বাংলা ট্রিবিউন: সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে জাতীয় রাজনীতি জমে উঠেছে। এই রাজনীতি বা সামগ্রিক অর্থে নির্বাচনকে ঘিরে আপনার সংগঠনের পরিকল্পনা কী?

সৈকত আরিফ: নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর একটা। একটি দেশে যখন জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকে না, তখন মানুষের মৌলিক অধিকার ভীষণভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের বিশাল অংশ যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন তাদের জীবনের প্রথম ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বর্তমান সরকার দেশে প্রবল কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে। সামনে একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা চাই।

আমরা মনে করি, দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দলীয় সরকারের অধীনে অতীতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনই প্রমাণ করেছে যে, এই প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই শিক্ষা, কাজ ও ভোটাধিকারের দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।

বাংলা ট্রিবিউন: ডাকসুর পর্ষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে এক বছরের ওপরে। পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আপনাদের ভাবনা কী? অনিয়মিত ডাকসু নির্বাচনের দায়ভার কোনোভাবে ছাত্র সংগঠনগুলোর ওপর বর্তায় কিনা?

সৈকত আরিফ: ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ডাকসু নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু ডাকসু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ডাকসু নির্বাচন নিয়মিতভাবে হতে থাকলে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বৃদ্ধি পাবে; সরকারদলীয় সংগঠনের একক কর্তৃত্ব কমবে; এসব বিবেচনাতেই ডাকসু বন্ধ রাখা হচ্ছে।

নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছাত্র সংগঠনগুলোর বিকাশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ছাত্র সংগঠনগুলো ডাকসু নির্বাচন চায়, ডাকসু বন্ধ রাখা হচ্ছে ক্যাম্পাসে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের একক কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই।

দলীয় কার্যক্রমে সৈকত আরিফ

বাংলা ট্রিবিউন: তাহলে ডাকসু নির্বাচন হলে ক্যাম্পাসে সহাবস্থানও নিশ্চিত হবে, মনে করছেন আপনি? প্রশ্নটা আরেকভাবেও করা যায়, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে ডাকসু ভূমিকা কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?

সৈকত আরিফ: ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে ডাকসুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ডাকসু নির্বাচনকে যদি ক্যাম্পাসের একাডেমিক ক্যালেন্ডারের অংশ বানানো হয়, তাহলে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশের উন্নতি ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ নিতে পারবে; ক্যাম্পাসে কোনও সংগঠন এককভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে পারবে না। ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে ডাকসু অপরিহার্য। ডাকসু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন আয়োজন করছে না, আবার এই আয়োজন করতে না পারার দায় তারা চাপাচ্ছেন ছাত্র সংগঠনগুলোর উপর যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না থাকায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকছে না এবং বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রমনা নাগরিক তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হচ্ছে চাটুকারদের স্বর্গরাজ্যে।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সঙ্কট কমিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত মাস্টারপ্ল্যান কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলে আপনি মনে করেন?

সৈকত আরিফ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সঙ্কট, ক্লাসরুমের সঙ্কট সমাধানে নতুন ভবন তৈরি করা দরকার। ছাত্ররা যাতে মানসম্মত পরিবেশে থাকতে পারেন, ক্লাস করার জন্য পর্যাপ্ত রুম পান, ভালো মানের খাবার পান; এজন্য প্রশাসনের যা করা দরকার সেটা করতে হবে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য গণপরিবহন ব্যবস্থা, সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করার প্রস্তাব অবশ্যই পজিটিভ। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ উন্নতিতেও প্রশাসনের মাস্টারপ্লান গ্রহণ করতে হবে। হলগুলোতে কিভাবে গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন বন্ধ করা যাবে, কিভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যাবে, শিক্ষার্থীদের যাতে কেউ জোর জবরদস্তি করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে শক্তিশালী করার যথাযথ মাস্টারপ্লান গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখে শুধু নতুন চকচকে ভবন দিয়ে আমরা যে মানের নাগরিক গড়ে তুলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে যেভাবে গড়ে তুলতে চাই সে লক্ষ্যে আমরা পৌছাতে পারবো না।

বাংলা ট্রিবিউন: বিচ্ছিন্নভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনলেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং সন্তোষজনক না। এর পেছনে শিক্ষক রাজনীতির কোনও দায় দেখছেন কিনা?

সৈকত আরিফ: এখন অনেক বেশি সংখ্যক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অনেকটাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সেভাবে সহযোগিতা করতে পারছে না। এমনকি আন্তর্জাতিক স্কলারশিপের মনোনয়নের জন্য মৌখিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সরকারদলীয় শিক্ষকদের দেখা যায় তাতেও তাদের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আমরা জানতে পারি। অন্যদিকে শিক্ষকরা দলীয় রাজনীতিতে যেভাবে জড়িয়ে পড়ছেন, এমনকি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেভাবে রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে; তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার মান কমেছে এবং যে শিক্ষকরা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত তারা অনেকেই তাদের অনুসারীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমছে যার প্রভাব পড়ছে র‌্যাংকিংয়ে।

বাংলা ট্রিবিউন: ক্ষমতাসীন দলের 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণের ঘোষণাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?

সৈকত আরিফ: স্মার্ট বাংলাদেশের কথা এমন সময়ে বলা হচ্ছে, যখন দেশে তারা একটা কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছেন। বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে বর্তমান সরকার জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। এমনকি র‌্যাবের মতো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হয়েছে। দুর্নীতি-লুটপাট-অর্থপাচারের ফলে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এগুলোর ধারাবাহিকতা চালানোর জন্য তারা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছেন।

অন্যদিকে এই কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিপরীতে বিরোধী দলগুলো রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কর্মসূচি হাজির করেছে। যাতে বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য, সাংবিধানিক কমিশনের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার সেই প্রস্তাবনা দিচ্ছে। ভিন্নদিকে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলে তারা জনগণকে কি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন? বিদ্যমান ব্যবস্থাকেই তারা টিকিয়ে রাখবেন। তাদের ঘোষিত এই স্মার্ট বাংলাদেশের প্রস্তাবনা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমাদের দেশের মানুষ ভোটাধিকার চান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চান, গণতান্ত্রিক দেশে বাস করতে চান, যার কোনোটাই তথাকথিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে পারবে না।

/ইউএস/
সম্পর্কিত
একান্ত সাক্ষাৎকারে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু৭২-এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের, দেশের মানুষ ইতিহাসের বিকৃতি মানবে না
সাক্ষাৎকারএকাত্তর ইতিহাস নয়, রাজনৈতিক চর্চায় পরিণত হয়েছে: আফসান চৌধুরী
সাক্ষাৎকারবিপ্লবের পর কথা বলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে: পররাষ্ট্র সচিব
সর্বশেষ খবর
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
কালুরঘাটে হচ্ছে নতুন সেতু, ভিত্তিপ্রস্তরে থাকছে না প্রধান উপদেষ্টার নাম
কালুরঘাটে হচ্ছে নতুন সেতু, ভিত্তিপ্রস্তরে থাকছে না প্রধান উপদেষ্টার নাম
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
সর্বাধিক পঠিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি