X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

২১ আগস্টের ষড়যন্ত্র ১১ স্থানে

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৪আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৮

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করতে ১১টি স্থানে ষড়যন্ত্রমূলক সভা হয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ১৭তম দিনের মতো যুক্তিতর্কে এ তথ্য উপস্থাপন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ডিজিএফআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি,এনএসআই’র মাঠ কমকর্তা ইউসুফ হোসেন, তৎকালীন অতিরিক্ত ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূইয়া, লে. কমান্ডার মিজানুর রহমান (এক্সিকিউটিভ), পুলিশের নায়েক মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ সদস্য মো. আল-মামুন,পুলিশ সদস্য মো. আহসান হাবিব, মেজর (অব.) আতিকুর রহমানের দেওয়া সাক্ষ্যের আলোকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
আতিকুর রহমানের দেওয়া সাক্ষ্যের আলোকে যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় মামলার বুধবারের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে। মামলার কার্যক্রম আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। আদালতের আদেশে বলা হয়, আগামী ১১, ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর মামলার কার্যক্রম যথারীতি চলবে।
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি এ মামলার ২৫ আসামিকে সম্পৃক্ত করে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এই ২৫ আসামি হলেন- এএসপি (অব.) আবদুর রশিদ, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম আরিফ, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, মেজর জেনারেল এটিএম আমিন (পলাতক), মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, হানিফ পরিবহনের মালিক হানিফ (পলাতক), বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী (পলাতক), ডিআইজি খান সাঈদ হাসান (পলাতক), সাবেক আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার (পলাতক), লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লুৎফুজ্জামান বাবর, শেখ আবদুস সালাম, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক), মুফতি হান্নান, আবু জানদাল, এএসপি (অব.) মুন্সী আতিকুর রহমান, এসপি ওবায়দুর রহমান খান, বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, শরীফ সাইদুল আলম বিপুল, আইজিপি শহীদুল হক এবং তারেক রহমান।
এই সাক্ষীর জবানবন্দির আলোকে রাষ্ট্রপক্ষ উল্লিখিত আসামিদের অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ওই হামলার আলামত নষ্ট এবং অপরাধীদের বাঁচাতে বিভিন্ন তৎপরতার বিষয় তুলে ধরে।


সাক্ষী সাদিক হাসান রুমি তৎকালীন ডিজিএফআই কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করলে তাকে বদলি করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কে জানায়, রেজ্জাকুলকে বদলি করলেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ২১ আগস্ট হামলা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার যুক্তি সাক্ষী ইউসুফ হোসেনের জবানবন্দির আলোকে তুলে ধরা হয়।


যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ মুফতি হান্নানসহ অন্য জঙ্গিদের (মামলার আসামি) সঙ্গে তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনের যেসব ব্যক্তি  ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের বিষয়ে উল্লিখিত সাক্ষীদের জবানবন্দির আলোকে বুধবার যুক্তি পেশ করা হয়।
প্রধান কৌঁসুলিকে যুক্তিতর্ক পেশে  সহায়তা করেন আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল ও ফারহানা রেজা। এ ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল, মো. আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত ও আশরাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুল সোবহান তরফদারসহ অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে।


এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির জ্যেষ্ঠ বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দসহ ২২৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষেও ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এসব সাক্ষ্য জেরা করেছে।



২১ আগস্টের ওই নৃশংস হামলায় পৃথক দুটি মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদাবক্স চৌধুরী, লে. কমান্ডার (অব:) সাইফুল ইসলাম ডিউক এবং মামলার সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা- সিআইডি’র সাবেক এসপি রুহুল আমিন, সিআইডি’র সাবেক এএসপি আতিকুর রহমান ও আবদুর রশিদসহ মোট ৮ জন জামিনে রয়েছেন। তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মেজর জেনারেল (এলপিআর) এটিএম আমিন, লে.কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ ১৮ জন এখনও পলাতক। এছাড়া, তিন জন আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুফতি হান্নান ও শরীফ সাইদুল আলম বিপুলের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী রয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্য নেতারা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

সূত্র: বাসস


/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী