পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হওয়ার পেছনে সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে এগুলো দূর করা সম্ভব বলে মনে করছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘পেঁয়াজের এতো ঝাঁজ?’ শীর্ষক বৈঠকিতে এসব কথা বলেন বক্তারা। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে শুরু হয় সাপ্তাহিক এই আয়োজন।
বৈঠকিতে শ্যামবাজারের আড়তদার মো. শামসুর রহমান বলেন, ‘তোফায়েল আহমেদ বাণিজ্যমন্ত্রী থাকা কালে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, টিসিবি, আমদানিকারক, আড়তদারের সমন্বয়ে একটি মিটিং করতেন। আগে এভাবেই তিনি সবাইকে একটি মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখতেন। কিন্তু আমি বর্তমানে এসব দেখছি না। দেখছি না বলেই মন্ত্রী-সচিবরা অনেক তথ্য থেকে আমাদের দূরে রাখছেন। তারা শুধু মিটিং করছেন যারা এলসি করে তাদের সঙ্গে। আমদানিকারকরা তো লাভ করতেই চাইবেন। আর আমরা মধ্যস্থতাকারী, আমরা চলি কমিশনের ওপর। যেকোনও পরিমাণ পেঁয়াজেই আমাদের কমিশন নির্দিষ্ট। এর ওপরে কিন্তু আমাদের উপার্জনের সুযোগ নেই। তাহলে আমরা তো সরকারকে পরামর্শ দিতে পারি। তাহলে আমাদের বাদ দিয়ে মন্ত্রণালয় কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাইকে ডেকে সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ থাকলো। ভোক্তার দিক থেকে আসলে সরকারের অনেক পলিসিতে ভুল আছে। এই সরকারের আমলে টিসিবির আরও ভালো অবদান থাকার কথা ছিল। পেঁয়াজের কেজি যদি মিশরেরটা ৪৫ টাকা হয় তাহলে টিসিবি কেন শ্যামবাজার থেকে ২০৫ টাকায় কিনবে?’
কাওরান বাজার আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা শুনতেসি সাড়ে সাত লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি। সেটা কতটা সত্যি? এটি সত্যি না। উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়, এ বছর এই পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। তারা অর্ধেক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করেও তার থেকে দ্বিগুণ বেশি দেখায়। তাদের এই তথ্য সঠিক নয়। এই কারণে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন করে বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে কত মেট্রিক টন ঘাটতি আছে সেটা নির্ধারণ করে আগামী দিনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে টিসিবির নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত পেঁয়াজের মূল্য।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) স্কুল অব বিজনেসের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী রাজীব বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা কিন্তু অনেক বেড়েছে। পেঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে আমদানি নিয়ে আগ্রহী সবাই। আমদানি না করেও কিন্তু আমরা এটা সামলাতে পারবো। আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা দেড় গুণ বেড়েছে। একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সরকার একটু চেষ্টা করলে, একটু উদ্যোগ নিলে দুই বছরের মধ্যেই নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজে ঘাটতি মেটানো সম্ভব।’
বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাড়ে সাত লাখ টনের ঘাটতি আমার ১৯ লাখ টনকে প্রভাবিত করে। এটিকে মাথায় রেখে আমাদের আগামী মৌসুমের পেঁয়াজ উৎপাদনসহ যেকোনও পণ্যতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য সঠিক পরিকল্পনা দরকার।’
রাজধানীর পান্থপথে বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিও থেকে এ বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করেছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজ। পাশাপাশি বাংলা ট্রিবিউনের ফেসবুক ও হোমপেজে লাইভ দেখা গেছে এ আয়োজন। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগিতায় বৈঠকিটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।