X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএনও ওয়াহিদার বাসায় টাকা ছিল ৪০ লাখ, রবিউল নেয় ৫০ হাজার!

নুরুজ্জামান লাবু
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:২১আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৩৭

গ্রেফতার রবিউল ইসলাম দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের বাসায় নগদ প্রায় ৪০ লাখ টাকা ছিল। ছিল স্বর্ণালঙ্কারও। কিন্তু হামলাকারী রবিউল ইসলাম নিয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। বাকি টাকা আলমারিতে থাকায় রবিউল নিতে পারেনি। খোয়া যায়নি স্বর্ণালঙ্কারও। জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছে, ইউএনও’র বাসায় নগদ টাকা আছে এটা সে ধারণা করেছিল। কিন্তু এত টাকা রয়েছে এই তথ্য তার জানা ছিল না। এছাড়া সে চেষ্টা করেও আলমারি খুলতে পারেনি। ক্ষোভ থেকে হামলা ও নগদ টাকা চুরির পরিকল্পনা করেছিল সে।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং মামলা সংক্রান্ত নথি ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ইউএনও’র বাসার সাবেক মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী রবিউল আলমারি খুলতে পারেনি। সে ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে অচেতন করে ওয়্যারড্রোবের ওপরে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। যদি সে আলমারি খুলতে পারতো তাহলে হয়তো সব নগদ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে যেত। 

গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের বাসায় ঢুকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত তাকে ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে আহত করে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হলে দুই দিনের মাথায় এলিট ফোর্স র‌্যাব আসাদুল, নবিরুল ও সান্টু নামে তিন জনকে গ্রেফতারের পর তাদের জড়িত থাকার কথা জানায়। চুরির উদ্দেশ্যে ওই বাসায় আসাদুল, নবিরুল ও সান্টু ঢুকেছিল বলে জানিয়েছিল র‌্যাব। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পর গত ১২ সেপ্টেম্বর পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ইউএনও অফিসের বরখাস্ত হওয়া মালি রবিউল একাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। একই সঙ্গে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়িও উদ্ধারের কথা জানান তিনি। পরে রবিউলকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসায় রবিউলের বাইরে আর কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করার ক্ষোভ থেকে হামলা করেছে বলে সে জানিয়েছে। এখনও তদন্ত চলছে। তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে হামলার মোটিফ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার করে বলা যাবে।’

যেভাবে ইউএনও’র বাসায় ঢোকে রবিউল

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও’র বাসভবনের সাবেক মালি রবিউল ইসলামের বাড়ি বিরল উপজেলার ভিমরুল পাড়ায়। সকালে সাইকেল চালিয়ে সে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায়। সেখানে কাজ শেষ করে বেলা ১১টার দিকে শহরের ষষ্টিতলা মোড়ে মুরাদের সেলুনে যায়। সেখানে দীর্ঘ সময় সে মোবাইলে গেম খেলে। দুপুর দেড়টার দিকে মুরাদের কাছে ১০০ টাকা ধার চায় রবিউল। কিন্তু মুরাদ টাকা ধার দেয়নি। রবিউল এ সময় মুরাদকে বিশেষ কাজে বাইরে যাওয়ার কথা বলে তার দোকানে সাইকেলটা রাখতে চায়। মুরাদ তার দোকানে সাইকেল রাখার ব্যবস্থা নেই জানিয়ে পাশের আইনুলের গ্যারেজে সাইকেল রাখতে বলে। রবিউল এ সময় সাইকেল নিয়ে আইনুলের গ্যারেজে রাখে। বিশেষ কাজে বাইরে যাওয়ার কথা বলে রাতে নাও ফিরতে বলে জানায় সে। আইনুল সাইকেল রাখার জন্য দিনে ১০ টাকা ও রাতে ১৫ টাকা দিতে হবে জানালে রবিউল তাতে রাজি হয়। বিকাল ৩টার দিকে শহরের ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে যায় সে।

রবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দিনাজপুর শহরের ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে রবিউল তৃপ্তি পরিবহনে উঠে ঘোড়াঘাট রানীগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ডে নামে। সেখান থেকে ওসমানপুর উপজেলা চত্বরের বাইরে রাত ১টা পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে। পরে পুরাতন মসজিদের পশ্চিম দিকের দেয়াল টপকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে।

উপজেলা পরিষদের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং রবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তদন্ত সূত্র জানায়, রাত ১ টা ১৯ মিনিটে রবিউল গার্ডরুমের সামনে দারোয়ান আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করে। এরপর উপজেলার সরকারি কোয়ার্টারের সামনে দিয়ে ইউএনও’র বাসভবনের পশ্চিম দিকের দেয়াল টপকে বাসভবন চত্বরে প্রবেশ করে। সেখানে কিছুক্ষণ বাসভবন পর্যবেক্ষণ করার পর রাত ১টা ৪৬ মিনিটে বাসভবনের পেছনের কবুতরের ঘরের দিক থেকে একটি মই হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে আসে। ২টা ২ মিনিটে সে একটি হাতুড়িসহ গোলঘরে গিয়ে একটি চেয়ার নিয়ে যায়। চেয়ার ও মই দিয়ে সে বাসভবনের দ্বিতীয় তলায় উঠতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।

প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ, দ্বিতীয়বার সফল

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছে, প্রথম দফায় দ্বিতীয় তলায় উঠতে ব্যর্থ হয়ে চেয়ার ও মই রেখে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজেও রাত ২টা ২৬ মিনিটে তাকে চেয়ারটি পুনরায় গোলঘরে ও মইটি বাসভবনের পশ্চিম দিকে রেখে আসতে দেখা যায়। এরপর ২টা ৩৬ মিনিটে রবিউলকে খালি হাতে গোলঘরের দিকে গিয়ে আবার ফেরত এসে বাসভবনের বাইরের সিকিউরিটি লাইট বন্ধ করতে দেখা গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় রাত ৩টা ২৯ মিনিটে তাকে আবার আমগাছের নিচ থেকে মই ও ব্যাগ নিয়ে বাসভবনের দিকে যেতে দেখা গেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছে, ব্যর্থ হয়ে চলে যেতে উদ্যত হওয়ার সময় তার মনে হয় দ্বিতীয় তলায় ওঠার কেচি গেটের চাবি বাসার সিকিউরিটি গার্ড পলাশের কাছে থাকতে পারে। এজন্য সে গার্ডরুমে গিয়ে পলাশকে নাক ডেকে ঘুমাতে দেখে। গার্ডরুম থেকে সে একটি তালা ও কিছু চাবি নিয়ে প্রথমে বাইরে থেকে গার্ডরুম তালাবদ্ধ করে রাখে। কিন্তু কেচি গেট খুলতে না পেরে গার্ডরুমের সামনে থেকে টুল নিয়ে যায়। চেয়ার ও টুল একসঙ্গে করে মই বেয়ে সে দ্বিতীয় দফায় ইউএনও’র বাসভবনের দ্বিতীয় তলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে।

রবিউলের দেওয়া তথ্যমতে, বাথরুমে ঢোকার পর সে বুঝতে পারে বেডরুমের ভেতর থেকে বাথরুমের ছিটকিনি আটকানো। ধাক্কা দিয়ে সে ছিটকিনি ভেঙে বেডরুমে প্রবেশ করে। এরমধ্যে শব্দ পেয়ে ইউএনও তার বাবাকে ডাক দেন। রবিউল সঙ্গে সঙ্গে ইউএনও’র মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। ইউএনও ওয়াহিদা অচেতন হয়ে পড়ে যাওয়ার পর তার বাবা সেখানে আসেন। রবিউল তাকেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে মেঝেতে ফেলে দেয়। রবিউল ইউএনও’র বাবার কাছে আলমারির চাবি চায়। চাবি না দিলে তার নাতিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ইউএনও’র বাবা ওমর আলী তার নাতিকে না মেরে ঘরে যা আছে নিয়ে যেতে বলেন।

আলমারিতে ছিল ৪০ লাখ টাকা, খুলতে ব্যর্থ হয় রবিউল

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানায়, ইউএনওর বাসায় নগদ টাকা রয়েছে এ বিষয়ে ধারণা ছিল রবিউলের। কিন্তু সে একটা চাবি পেয়ে আলমারি খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে ওয়্যারড্রোবের ওপরে রাখা ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল নেয় সে। এ সময় ফজরের নামাজের আজান শুরু হলে সে দ্রুত ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়ে চলে যায়। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, রাত ৪টা ৩১ মিনিটে মই ও ব্যাগ নিয়ে আম গাছের দিকে যাচ্ছে রবিউল। রাত ৪টা ৪০ মিনিটে উপজেলার মেইন গেটের দিকে যেতে দেখা যায় তাকে। যাওয়ার সময় ইউএনও’র বাসভবন ও অন্য কোয়ার্টারের মাঝখানে এক গোছা চাবি ফেলে যায় সে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহানুর রহমানের উপস্থিতিতে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম ও মামলার বাদী ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন মিলে ইউএনও’র বাসার আলমারি খুলে দেখেন সেখানে রাখা নগদ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা, পাঁচ হাজার ইউএস ডলার, স্বর্ণালঙ্কার, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও জমা রসিদ এবং জমির দলির সব অক্ষত রয়েছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মামলার বাদী ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিনের হেফাজতে দিয়ে দেন। ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম

যোগাযোগ করা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহানুর আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি সেখানে ছিলাম, ঘোড়াঘাটের ওসি সাহেব ছিলেন, পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে বাদী কী কী নিয়ে গেছেন এ বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।’

যোগাযোগ করা হলে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, ‘বাসা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা ছিল, তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাদী নিয়ে গেছেন। এগুলো যেহেতু মামলার কোনও আলামত নয়, ফলে এসব নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য নেই।’

হাতুড়ি পুকুরে ছুড়ে, শার্ট-গামছা পুড়িয়ে ফেলে রবিউল

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানায়, ইউএনও’র বাসা থেকে বের হয়ে সে নতুন ভূমি অফিস সংলগ্ন পুকুরে হাতুড়িটি ফেলে দেয়। হেঁটে হেঁটে সে ঘোড়াঘাট টিএন্ডটি মোড়ে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় হানিফ পরিবহনের ঢাকাগামী একটি বাস এলে তাতে উঠে বিরামপুরে গিয়ে নামে। বিরামপুর শহরের ঢাকা মোড়ের একটি গলিতে গিয়ে একটি গাছের নিচে হাতে থাকা লাল প্লাস্টিকের ব্যাগ ও ব্যাগে থাকা লাল শার্ট, লাল গামছা, মাংকি ক্যাপ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। বিরামপুর বাজারে গিয়ে একটি হোটেলে ৩০ টাকা দিয়ে খিচুড়ি খায়। পরে সেখান থেকে একটি পিকাপে করে দিনাজপুর শহরে যায়। যষ্টীতলার আইনুলের গ্যারেজ থেকে সাইকেল নিয়ে সোজা চলে যায় বিরলের নিজ বাড়িতে। বাড়িতে গিয়ে গোসল করে ভাত খেয়ে সাইকেল নিয়ে আবারও দিনাজপুরে ডিসি কার্যালয়ে যায়। পরে গোর-এ শহীদ ময়দানের পাশে কালেক্টরেট স্কুলের সামনে গিয়ে খোকন নামে একজনকে ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা দেয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা খোকনের কাছ থেকে ওই টাকা উদ্ধার করেছেন। খোকন, সেলুন মালিক মুরাদ ও গ্যারেজ মালিক আইনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও রবিউলের স্বীকারোক্তির সঙ্গে মিল পেয়েছেন। তিন জনকেই এই মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।

গত শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় খোকনের সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরা বেগমের আদালতে মুরাদ ও আইনুলের সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ইউএনওকে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়িটি পুকুর থেকে উদ্ধারের পর জব্দ করা হয়েছে।

ক্ষোভ থেকেই হামলা ও টাকা চুরি

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছে, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর ক্ষোভ থেকে হামলা ও টাকা চুরি করার পরিকল্পনা করেছিল সে। ২০০৮ সালে রবিউল দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফরাশ (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) হিসেবে যোগ দেয় সে। ২০১১ সালের ২৪ মে থেকে সে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে মালি হিসেবে কাজ করে। গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে ঘোড়াঘাট উপজেলায় বদলি করা হয়। সেখানেও মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতো সে।

রবিউল জানায়, সে গত কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটসহ অনলাইনে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে কয়েক লাখ টাকা ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়ে। রবিউলের দাবি, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি সে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ১৬ হাজার টাকা চুরি করেছিল। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ইউএনওকে সে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে, যাতে তার চাকরি নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়। ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ইউএনও তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি ইউএনও টাকা চুরির বিষয়টি উল্লেখ করে রবিউলের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন দেন। ৫ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা দায়েরের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রবিউলের দাবি, এ কারণেই সে ইউএনও’র ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। ক্ষোভ থেকেই সে পরিকল্পনা করে হামলা ও টাকা চুরি করতে যায়।

আরও পড়ুন- 

ইউএনও ওয়াহিদার ওপর একাই হামলা করে সাময়িক বহিষ্কৃত মালি রবিউল!

ইউএনও ওয়াহিদার ব্যাগ থেকে ৫০ হাজার টাকা চুরি করেছিল রবিউল

 
 

হাতের সঙ্গে ইউএনও ওয়াহিদার ডান পায়েরও উন্নতি

ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলার ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে: আইজিপি 

ইউএনও’র ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে: কাদের 

ইউএনও ওয়াহিদার সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ডান সাইড প্যারালাইজড হয়ে গেছে ওয়াহিদার

ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলায় দুই জন আটক

ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

এটা সিরিয়াস ক্রাইম: রংপুর বিভাগীয় কমিশনার

ইউএনও’র ওপর হামলাকারী ছিল পিপিই পরা

ইউএনও’র ওপর এমন হামলা বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ

ইউএনও ও তার বাবাকে কুপিয়ে ‘মৃত ভেবে’ ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা

ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও’র ওপর হামলা

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা