ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের খুনের বিচার দাবি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১৪ মে) ঢাবির রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রদল। তবে অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেছে ছাত্রদলের বহিরাগত একাধিক নেতাকর্মী।
সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রশাসন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, আমরা ভেবেছিলাম নতুন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? ফজলুল হক হলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করা হয়েছে। চারুকলায় ম্যুরাল পুড়িয়ে ফেলা হলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ দেখিনি। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখি তাহলে আমরা ভিসি ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবো। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভিসি-প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১২টায় সাম্যকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে এই ঘটনা প্রমাণিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আর নিরাপদ নয়। এর আগেও মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জলকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। প্রক্টর আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগও দাবি করছি। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে ভিসিও এর দ্বায় এড়াতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, অনতিবিলম্বে সাম্যের হত্যার বিচার দাবি করছি। প্রতিটি হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্ৰেফতার করার দাবি জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেও অনেক আওয়ামী লীগ দোসর রয়েছে, তাদের দ্রুত গ্ৰেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গতকাল রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় শিক্ষার্থী সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত ভিসি-প্রক্টর থেকে কোনও স্পষ্ট বিবৃতি আমরা পাইনি।
তিনি বলেন, এই প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচার করা। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনও স্পষ্ট অবস্থান আমরা দেখতে পাইনি। আমাদের মনে হয় তাদের দ্বারা কখনও সাম্য হত্যার বিচার করা সম্ভব না।
ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করবো। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে, আমরা আশা করবো ভিসি-প্রক্টর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। নয়তো রাজপথে অবস্থান নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের দাবি আদায় করবো। আগামীতে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে একজন ছাত্রদলও নেতা যদি হামলার শিকার হয় তাহলে আমরা ইন্টেরিমের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবো।