বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মকবুল আহমাদ মারা গেছেন। তিনি মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মকবুল আহমাদ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দলটি।
আমির মকবুল আহমাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির আমাদের শ্রদ্ধাভাজন অভিভাবক। আমরা একজন যোগ্য ও দরদি অভিভাবককে হারালাম। মকবুল আহমাদ ছিলেন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার অত্যন্ত সহজ-সরল জীবন-যাপন ও দাওয়াতি চরিত্র মানুষকে বিমোহিত করতো।
মৃতের ছোট ভাই খবির আহমেদের সঙ্গে কথা বলে ফেনী প্রতিনিধি জানান, জামায়াতের এই নেতা এক সপ্তাহ ধরে ওই বেসরকারি হাসপাতালটির আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন বলেও জানান তার ছোট ভাই। জানাজার বিষয়ে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান খবির।
মকবুল আহমাদ ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার পূবচন্দপুর ইউনিয়নের সাপুয়া গ্রামে ১৯৩৯ সালের ২রা আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। পূর্বচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে দাগনভূঞার কামাল আতাতুর্ক হাইস্কুলে ভর্তি হন। এরপর ১৯৫৭ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে জায়লস্কর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে বি.এ. পাস করেন।
মকবুল আহমদ বি.এ. পাস করার পর সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। একবছর পর সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। পরে ১৯৭০ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছিলেন ফেনী মহকুমাধীন ‘দৈনিক সংগ্রাম’ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বিতর্কিত ভূমিকা তেমন কিছু পাওয়া না গেলেও তিনি সে সময়ে ছিলেন জামায়াতের বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার আমির। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়ার পর ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হয়ে এ দায়িত্বে ছিলেন এক যুগ। ২০০৩ থেকে দলটির নায়েবে আমির ছিলেন। তবে ২০১০ সালের জুনে দলের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে মকবুল আহমাদ ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৃতীয় আমীর হিসেবে নির্বাচিত হন।