অতীতের ভুল স্বীকার করে মুজিববর্ষের কর্মসূচিতে বিএনপিকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। রবিবার (১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ১৪ দল আয়োজিত এক শপথগ্রহণ কর্মসূচিতে এ আহ্বান জানান তিনি। ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ, নারী ও শিশু নির্যাতনে রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’–স্লোগানকে ধারণ করে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সারাদেশ স্বাধীনতার স্থপতির জন্মশতবার্ষিকী পালনে প্রস্তুত, কিন্তু, এ নিয়ে বিএনপির কোনও কর্মসূচি নেই। যারা বঙ্গবন্ধুকে অশ্রদ্ধা করেছে, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে যারা কেক কেটেছে, তাদের সঙ্গে কোনও দিন আপস হবে না, হওয়ার নয়। তিনি বলেন, যদি শরম থাকে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করুন। বিএনপির বন্ধুদের বলবো, ভুল স্বীকার করে বাঙালি জাতির সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করুন। তাহলে আপনাদের পাপ বাংলার জনগণ কিছুটা হলেও ক্ষমা করতে পারে। না হলে জাতি কোনও দিনই আপনাদের ক্ষমা করবে না। সারা বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে, তাহলে আপনারা কেন পালন করবেন না?’
১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে সামনে রেখে অভিভাবক, নারী সমাজ, জনগণকে বলতে চাই, ওই দানবদের রুখতে হবে। দেশে একজন সাহসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছেন, জঙ্গি দমন করেছেন, বিএনপির সৃষ্ট অন্ধকার থেকে দেশকে আলোকিত করেছেন। তার সেই সরকারের শাসনামলে কোনও নারী-শিশু নির্যাতন হতে পারে না। তাই আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, নারী-পুরুষ শপথ নিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্যাতন বন্ধ করতে। আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলবো, দ্রুত বিচার আইন আরও সংক্ষিপ্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতনকারী দানবদের বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। আইনটি পরিবর্তন করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করতে হবে। এ সময় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে উপস্থিত জনতাকে হাত তুলে শপথ করান তিনি।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। রক্তের মধ্য দিয়ে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। তাই আমরা মনে করি মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসবে আমাদের মাটিতে। এখানে ঘোলা পানিতে কোনও মাছ শিকার করা যাবে না। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী আসবেন। কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তি নেই, যারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ও শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
এ কর্মসূচিতে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরাসহ সাধারণ জনগণ অংশ নেন।