গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আজ পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আর সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে অন্য প্রধানদের কী অবস্থা হতে পারে? অন্যদের থলের বিড়াল এখনও বের হয়নি। অবসরে গেলে বের হবে।’
শুক্রবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাজার কারসাজি, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক বলেন, ‘এই বেনজীরকে পুলিশের প্রধান কে বানিয়েছে? ধাপে ধাপে প্রমোশন দিয়ে ডিএমপি কমিশনার, র্যাবের প্রধান, পুলিশের প্রধান কে বানিয়েছে? শেখ হাসিনা বানিয়েছেন। তাই বেনজীরের অপকর্মের দায় তিনি এড়াতে পারেন না। একইভাবে পুরান ঢাকার সন্ত্রাসী পরিবারের সন্তান, যার আপন ভাইয়েরা সন্ত্রাস, নব্বইয়ের দশকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ যারা নিয়ন্ত্রণ করতো, তারাই এই আজিজ পরিবার। এই পরিবার থেকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার রুচি ও মানসিকতা প্রকাশ করেছেন।’
নুর বলেন, ‘আমি সাংবাদিক ভাইদের বলি একটু খুঁজে বের করেন। ঢাকার মধ্যে তিন জন ডিআইজি পাবেন, যাদের অলরেডি একেকজনের সম্পদের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার ওপরে। তো এ রকম তিন জন ডিআইজি না, আরও অনেক আছেন।’
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ভাইদের কাছে অনুরোধ করবো, আপনারা বেনজীর ও আজিজকে পুলিশ প্রতিষ্ঠানে ও ক্যান্টনমেন্টে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করুন। কারণ এই দুজন কুখ্যাত ব্যক্তি বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে সামরিক ও পুলিশ বাহিনীকে কলঙ্কিত করেছেন। তাদের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। আমাদের কথা পরিষ্কার, আরও যারা জনগণকে জিম্মি করে বিশিষ্ট শিল্পপতিতে পরিণত হয়েছেন, সেটা ব্যাংক লুটেরা এস আলম হোক কিংবা বসুন্ধরা হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘আনারের মতো একজন সোনা চোরাচালানকারী তিনবার বাংলাদেশের আইনপ্রণেতা হয়েছেন। এ রকম দুর্বৃত্তকে সুযোগ কে দিয়েছে? আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনা দিয়েছেন। তাহলে তিনি কি দায় এড়াতে পারেন? পারেন না। একজন আনার মারা গিয়েছে বলে তার অপকর্ম আমাদের সামনে এসেছে। এ রকম আরও অনেক আনার সংসদে আছে। এমনকি মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গর্ব করে বলেছেন “দেশ ভাড়া দিয়ে ক্ষমতায় আসবো না”। আমি বলি, দেশ ভাড়া কী দেবেন, দেশ তো ভারতের কাছে বিক্রিই করে দিয়েছেন। ভাড়া দেওয়ার কিছু নাই। ভারত তো ইজারাদার, আপনি ও আপনার মন্ত্রীরা ভারতকে ইজারা দিয়ে এই দেশ চালাচ্ছেন।’
নুর বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করলে আওয়ামী লীগের অনেক এমপি-মন্ত্রীর ফাঁসি হবে। কাজেই জনগণের কাছে মাফ চেয়ে সমঝোতার পথে হাঁটেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে হাঁটেন।’
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ দলের অন্য নেতাকর্মীরা।