সাকিব আল হাসান টেস্ট খেলতে চান না। কথাটা গুঞ্জন কিংবা ‘মিডিয়ার তৈরি’ নয়। খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কথাটা বলেছেন। যদিও এই তথ্যে ঘোর আপত্তি খালেদ মাহমুদ সুজনের। বর্তমানে টিম ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করা সাবেক এই অধিনায়ক জানিয়েছেন, সাকিব টেস্টই বেশি খেলতে চান। একই সঙ্গে কথা বলেছেন সাকিবের টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও। তার মতে, টেস্ট অধিনায়ক হলে সাকিবের পরিবর্তন আসতে পারে।
মঙ্গলবার বিসিবি সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সংবাদমাধ্যমকে মুমিনুল হক জানান, তিনি আর টেস্টের নেতৃত্বে থাকতে চান না, কথাটা বোর্ড প্রধানকে জানিয়ে এসেছেন। বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে মুমিনুলের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে, তিনি থাকতে চান না নেতৃত্বে। এই অবস্থায় আরেকটি আলোচনার পালে দোল খাচ্ছে, বাংলাদেশের পরবর্তী অধিনায়ক কে হচ্ছেন? অনেকের মতে, আবারও টেস্ট অধিনায়কত্বে ফিরতে পারেন সাকিব।
আজ (বুধবার) প্রশ্নটা টিম ডিরেক্টর সুজনের কাছেও এসে পৌঁছালো। সাকিবের নেতৃত্ব পাওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারলেন না। তবে দায়িত্ব পেলে সাকিবের মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে বলে তার মত। সবার আগে পরিষ্কার করলেন এই অলরাউন্ডারের টেস্ট খেলার বিষয়টি, “সাকিব সবসময় টেস্ট খেলতে চায় এখন। আমি জানি না কেন কথাটা বারবার আসে- সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না। সাকিবের সঙ্গে যতবার কথা বলেছি, সে বলে, ‘আমি অন্য ফরম্যাটের থেকে টেস্ট বেশি উপভোগ করি। আমি সবসময় বেশি টেস্ট খেলতে চাই।”
তাহলে টেস্ট নেতৃত্বে সাকিবকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা? এবার সুজনের উত্তর, ‘যদি সাকিব খেলতে চায়, সাকিব (নেতৃত্ব) দিতে চায়, আমি মনে করি সেটা সাকিবেরও একটা পরিবর্তন আসতে পারে। আমি বলছি না সাকিবই টেস্ট ক্যাপ্টেন হবে, তামিমও আছে। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু ছেড়ে দিয়েছে, মুশফিকও আছে। তবে সে (অধিনায়কত্ব) নেবে কিনা, সেটা বড় ব্যাপার। তো কে হবে, আমি জানি না।’
সাকিব অধিনায়ক হলে টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতি হবে কিনা, এমন প্রশ্নে সাবেক অধিনায়ক বললেন, ‘অবশ্যই। ইনজুরি, ফিটনেস এগুলো অনেক কিছুই মেটার করে। সাকিব খুবই অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার। আমার মনে হয়, সে টেস্ট ম্যাচ উপভোগ করে। এটার প্রমাণ হিসেবে আমি মনে করি, দুটো টেস্ট ম্যাচে সাকিব যে পরিমাণ বল করেছে, কবে সাকিব একটানা এতো বোলিং করেছে আমার মনেও নেই।’
কথাটা শেষ করে সুজন আবার বলতে শুরু করলেন, ‘আমাদের ভয় ছিল, দুটো টেস্ট ম্যাচে সাকিব বেশি বোলিং করবে না, কিন্তু সে প্রমাণ করেছে নিজেকে। ম্যাচের আগে ওর ফিটনেস নিয়ে অনেক কথা উঠেছিল। আমি মনে করি যে বল হাতে সাকিব অলওয়েজ গ্রেট। ব্যাট হাতে তেমন বড় কিছু করতে পারেনি। আমি মনে করি ও দায়িত্ব পেলে... ও তো এখনও ক্রিকেট খেলতে চায়, আরও দুই-তিন বছর খেলবে। যতদিনই খেলে উচিত বাংলাদেশের জন্য কিছু করা।’
মুমিনুল জানিয়ে দিয়েছেন টেস্ট নেতৃত্বে থাকছেন না। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন সুজন? শুনুন তার মুখেই, ‘একদিক থেকে আমি বলবো যে, মুমিনুলের এটা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। তার ক্যারিয়ারটা এখনও অনেক দূর নিয়ে যেতে হবে। তরুণ বয়সেই ও ওর পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছিল, এখন তো অনেক পরিণত হয়েছে। আশা করছি, আগামী সিরিজ থেকে আমরা অন্য মুমিনুলকে পাবো, ও রানের ধারায় ফিরবে। ওর রানে ফেরাটা আমাদের দলের জন্য খুবই জরুরি।’