পুরো বিপিএলে ভালো ক্রিকেট খেলে প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। টুর্নামেন্ট আরও রাঙিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল শুভাগত হোমের দলের সামনে। কিন্তু সোমবার এলিমেনেটরে ফরচুন বরিশালের কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো তাদের। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান তুলতে পারেনি তারা। তাতে ম্যাচটি সহজ হয়ে যায় তামিম ইকবালদের জন্য। তামিমের ব্যাটিং ও কাইল মায়ার্সের অলরাউন্ডিং নৈপুণ্যে ৭ উইকেটে অনায়াসেই জয় পায় চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম রান তুলতে না পারলেও একই উইকেটে ঝড় তুলেছে বরিশাল। তামিম-মায়ার্স মিলে ৫৪ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন এইদিন। তাদের এই জুটিতেই সহজ ম্যাচ জিতে তারা। অথচ চট্টগ্রামের টপ থেকে মিডল অর্ডার কিংবা দেশি থেকে বিদেশি কেউই হাত খুলে খেলতে পারেনি। এরই খেসারত দিতে হয়েছে দলটিকে। জশ ব্রাউন (৩৪) ও শুভাগতর (২৪) ব্যাটে চট্টগ্রাম কোনোমতে ১৩৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়।
ব্যাটাররা ঠিক সময়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বলেই এভাবে হারতে হয়েছে মনে করেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘টসের আগে দেখলাম উইকেট খুব ভালো ও শক্ত ছিল। আমরা সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের টপ অর্ডার যারা ছিল তারা পাওয়ার প্লেটা কাজে লাগাতে পারেনি। আমরা উইকেটও হারিয়েছি কিছু। এটা আমাদের জন্য হতাশাজনক, আমরা ভালো সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারিনি।’
লেজের দিকে চট্টগ্রামের একাদশে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার না থাকলেও বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার ছিলেন। কিন্তু তারাও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেননি। টম ব্রুস ও পেসার শহীদুল ইসলামের ইনজুরি ভুগিয়েছে পুরো দলকে। এমনই মত শুভাগতর, ‘ব্যাটার বলতে আমাদের তো অলরাউন্ডার ছিল। শেফার্ড ছিল আমাদের, হয়তো সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের ইনজুরি একটা ফ্যাক্ট ছিল। টম ব্রুসের কাঁধে চোট ছিল। সেজন্য সে কিপিং করতে পারেনি। সেখানে আমাদের একটা কিপার দরকার ছিল। ওখানেই ইমরানউজ্জামানকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। শহীদুল টুর্নামেন্টজুড়ে খুব ভালো করেছে। প্রতি ম্যাচেই ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছে। সে না থাকায় আমাদের বোলিং ইউনিট কিছুটা (ক্ষতিগ্রস্ত) হয়েছে।’
শুভাগত আরও যোগ করেন, ‘বিদেশিও আমরা সেরকম আনতে পারিনি এনওসির (জটিলতার কারণে) অনেক ঝামেলায়। আরেকটু যদি হিসাবনিকাশ করে ক্রিকেট খেলতে পারতাম তাহলে হয়তো ভালো কিছু হতো।’
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে যেতে না পারলেও হতাশ নন শুভাগত। পুরো টুর্নামেন্টে নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট চট্টগ্রামের এই অধিনায়ক, ‘গত বছরের চেয়ে এবারের দলটা অনেকটা গোছানো। যারা খেলেছে সবাই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এই বছর। আমাদের দলের বন্ধন ভালো ছিল। হয়তোবা খুব বেশি নামি খেলোয়াড় ছিল না। কিন্তু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো থাকায় ফলটা এসেছে আমাদের পক্ষে।’
এদিকে ব্যাট হাতে ছন্দময় ব্যাটিং করেছেন চট্টগ্রাম ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ৩৮৪ রান নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে আছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তার পারফরম্যান্স দেখে দারুণ খুশি শুভাগত, ‘খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। হয়তো শুরুর দিকে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। যত দিন গেছে নিজেকে মেলে ধরেছে। অবদান ছিল দলের প্রতি। টপ অর্ডারে ওর অবদান ভালো ছিল। আজকে হয়তো সেভাবে অবদান রাখতে পারেনি। আমি চাইবো যে, এভাবেই তার পারফরম্যান্সটা করে যাক।’