X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৬ আষাঢ় ১৪৩২

প্রথম দিনেই ১৭ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর বাইডেনের

বিদেশ ডেস্ক
২১ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১১আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১১

শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৭টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মধ্য দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেশ কিছু নীতি বিতর্কিত নীতি বদলে দিয়েছেন তিনি। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে অপচয় করার মতো কোনও সময় হাতে নেই। আমি আমেরিকার মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু করতে যাচ্ছি।’

জো বাইডেন যে ১৭টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তার তিনটিই করোনাভাইরাস মোকাবিলার বিষয়ে। দুইটি মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে আছে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন। ৩০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরানোর নির্বাহী আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন তিনি। আরেক আদেশে কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা তথা সমতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছেন বাইডেন। নির্বাচনের আগেই ক্ষমতায় এলে হোয়াইট হাউজে নিজের প্রথম দিনই এটি তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে তহবিলের জন্য ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন। অর্থাৎ, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে হোয়াইট হাউজে দেওয়া অভিষেক ভাষণে পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ কিংবা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মর্মমূলে আঘাত হানেন বাইডেন। দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ভোট জিততে বিভক্তির সূত্রে ট্রাম্প তাদের বিপরীতে শত্রু হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মুসলিম অভিবাসী আর মেক্সিকানদের। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের সেই বিদ্বেষী রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে বারবার বিভক্তির বিপরীতে ঐক্য জিতেছে।

ক্ষোভ, ঘৃণা, উগ্রবাদ, বিচারহীনতা, সহিংসতা, রোগ, বেকারত্ব আর হতাশা কাটিয়ে উঠতে আমেরিকার জনগণের ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন জো বাইডেন। বলেছেন, ‘ঐক্যের মাধ্যমে আমরা মহৎ কিছু করতে পারি, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারি।’

২০১৬ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বারাক ওবামার স্থলাভিষিক্ত হন ট্রাম্প। পশ্চিমের কথিত বিশ্বায়নের রাজনীতি ও অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করান তিনি। নব্য উদারবাদী অর্থব্যবস্থা মানুষকে যেখানে বিপন্ন করেছিল, ট্রাম্পের হাত ধরে নগ্ন বাজার আর পুরনো সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ সেখানে নিজের উত্থান ঘোষণা করে। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট সূত্রে তিনি বিভক্ত করেন মার্কিনসহ বিশ্বজনতাকে। ‘আমরা’  আর ‘ওরা’ বিভাজনের মধ্য দিয়ে ঘৃণার বেসাতি ছড়াতে থাকেন কৃষ্ণাঙ্গ-মেক্সিকান-মুসলমানদের বিরুদ্ধে। সাতটি মুসলিম দেশসহ আটটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব করেও ব্যাপক সমালোচিত হন ট্রাম্প। নিয়েছেন একের পর এক অভিবাসী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ। সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যে পড়েছে তার নগ্ন সাম্রাজ্যবাদী থাবা। জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানী ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উসকে দিয়েছেন। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গিয়েছেন অচেনা চেহারায়।

ট্রাম্প জমানার অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে জো বাইডেন বলেছেন, তার সমস্ত হৃদয়জুড়ে ঐক্যের প্রতিধ্বনি। ‘জানি যে শক্তি আমাদের বিভক্ত করেছে তা গভীর আর সেগুলো বাস্তব। কিন্তু এও জানি এগুলো নতুন নয়। আমাদের ইতিহাস হলো আমেরিকান আদর্শ হিসেবে পরিচিত আমাদের সমতার বোধ এবং আমাদের টুকরো টুকরো করে ফেলা বর্ণবাদ, স্বজনপ্রীতি,  ভয়, আর হুমকির মতো কঠোর বাস্তবতার মধ্যে চিরন্তন লড়াই,’ বলেন বাইডেন। তিনি আরও বলেন, ‘আজ, জানুয়ারির এই দিনে আমার সমস্ত আত্মা জুড়ে রয়েছে: আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, আমাদের জনগণের ঐক্য গড়তে হবে আর জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’ সূত্র: সিএনএন।

/এমপি/
সম্পর্কিত
মার্কিন শুল্কনীতিকে ব্ল্যাকমেইলের সঙ্গে তুলনা করলেন ম্যাক্রোঁ
হার্ভার্ডে ইহুদি ও ইসরায়েলি শিক্ষার্থীদের অধিকার লঙ্ঘনের আলামত পেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন: প্রতিবেদন
যুক্তরাষ্ট্রে ফাঁদ পেতে দমকলকর্মীদের ওপর হামলা, নিহত ২
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও মার্কিন পাল্টা শুল্ক বড় চ্যালেঞ্জ: বিজিএমইএ সভাপতি
ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও মার্কিন পাল্টা শুল্ক বড় চ্যালেঞ্জ: বিজিএমইএ সভাপতি
সর্বাধিক পঠিত
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’
এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা          ‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ