X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

১৮ দফা নয়, এক দফা চাই

রেজোয়ান হক
০১ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৫৭আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২১, ১৮:১৯

রেজোয়ান হক
গত মাসের শুরুতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৪ শতাংশের মতো। শেষদিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ শতাংশেরও বেশি, আর আজ এপ্রিলের প্রথম দিনে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩-এ। নতুন শনাক্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার, যা করোনাকালের সর্বোচ্চ আর মারা গেছেন ৫৯ জন, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মাত্র এক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির এমন অবনতি বলে দিচ্ছে আমরা কোনদিকে যাচ্ছি।

সোমবার (২৯ মার্চ) সরকার ১৮ দফা যে নির্দেশনা জারি করেছে তার তাৎক্ষণিক ফলাফলে বাস-লঞ্চের ভাড়া বেড়েছে, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত মানুষের নতুন ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, অফিসে অর্ধেক জনবল দিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত এখনও কার্যকর হয়নি। তাছাড়া অফিস-আদালত-ব্যাংকে নানা কাজে সাধারণ মানুষও যায়। এ সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার অফিস যাত্রী ও সাধারণ মানুষ দুদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে শুধু ভোগান্তিই পোহায়নি, ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠতে গিয়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতেও পড়ছে।

১৮ দফার ৩ নম্বরে বলা আছে, সব ধরনের মেলা নিরুৎসাহিত করতে হবে, অথচ পুলিশের পাহারায় বইমেলা চলছে, যেখানে স্বাস্থ্যবিধিকে কেউ তোয়াক্কা করছে না। লোক দেখানো ব্যবস্থা নিয়ে মেলার সময়সীমা কমিয়ে তিনটা থেকে সাড়ে ছয়টা করা হয়েছে। তার মানে সবাই এই সাড়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে একসঙ্গে ভিড় করবে। এতে সংক্রমণের প্রবৃদ্ধির উন্নতি হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

কাল দুই এপ্রিল মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা দেবে এক লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে একজন করে অভিভাবক থাকলেও শুধু এ উপলক্ষেই বাইরে বের হবেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। অথচ ১৮ দফা নির্দেশনার এক নম্বরেই বলা আছে, ‘সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করতে হবে, উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো।’ ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ ৩১টি মহানগর/জেলাকে সরকারই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে, যার অনেকগুলোতেই এ পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে গাদাগাদি করে বসে ডাক্তারসহ ৩০০ জনের অংশগ্রহণে ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মাদারীপুরের এক পৌরসভায় গতকাল নির্বাচনও হয়েছে। সামনে স্থানীয় সরকারের আরও নির্বাচন আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি বা লকডাউন দিতে খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ থাকলেও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকার তা বিবেচনা করছে না বলে শুনছি। কিন্তু মেডিক্যালে ভর্তি, বইমেলা, পৌর নির্বাচন ইত্যাদির সঙ্গে অর্থনীতির চাকা’র কী সম্পর্ক তা বুঝতে পারছি না।

ঢাকার করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ দূরের কথা, সাধারণ বেডও খালি নেই। অর্থনীতির চাকা সচল রাখা যাদের জন্য, সেই মানুষই যদি না বাঁচে তাহলে কী লাভ? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়া ঠেকাতে সরকারের কাছে অনুরোধ, সব দফা বাদ দিয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে অন্তত ১৫ দিনের জন্য লকডাউন বা ছুটির এক দফার ঘোষণা দিন।

লেখক: বার্তা প্রধান, মাছরাঙা টিভি

 

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ