গত বছর করোনা সংক্রমণ শুরুর পরপরই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অফিস, মার্কেট সব ছিল বন্ধ। মানুষ রাস্তায় নেমেছিল কম। পরবর্তীতে সংক্রমণ সহনীয় হয়ে আসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব খুলে দেওয়া হয়। এবছর মার্চে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে ভয়াবহ হয়ে। এপ্রিলে ঊর্ধ্বগতিতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবারও সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়া হয়। জীবন নাকি জীবিকার প্রশ্নে পুলিশের পক্ষ থেকে জরুরি প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাসের ব্যবস্থা করা হয়। লাখ লাখ নগরবাসী এই পাস নেন। সংশ্লিস্টরা বলছেন, বাইরে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়ে মানুষকে ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ একদিনে এত মৃত্যু আগে দেখেনি। করোনাতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১০ হাজার ৪৯৭ জন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী এলাকায় লকডাউন মানছেন না সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বেলা ৩টার পর চলাচল পুরো বন্ধ হওয়ার কথা তখন থেকে বেচাকেনা চলছে বেশি। ইফতারের দোকান সাজানো, কেনাকাটা ও চলাচল তখন পুরোপুরি শুরু হচ্ছে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) সরেজমিন পরিদর্শনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আদাবরে করোনার সংক্রমণ বেশি হলেও সেখানে লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে সব ধরনের কেনাকাটা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি দেখা গেলে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তবে ম্যাজিস্ট্রেরেটের গাড়ি কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি না থাকলে ইচ্ছে মতোই চলছে সাধারণের চলাচল কেনাকাটা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষণ লেলিন চৌধুরী বলেন, মানুষকে বের হওয়ার সুযোগ দিয়ে সর্বাত্মক লকডাউন নিশ্চিত করার কোনও সুযোগ নাই। অপ্রয়োজনে বের হওয়া যাবে না, প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হওয়া যাবে। প্রয়োজন শব্দটি আপেক্ষিক। যিনি বের হতে চান তিনি যে কারণটি দেখাচ্ছেন সেটা তার প্রয়োজন। ফলে সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে এই অপশন রাখার কোনও সুযোগ নেই।
মুভমেন্ট পাস কনসেপ্ট কতোটা কাজে এসেছে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সোহেল রানা বলেন, করোনাকালে অহেতুক মুভমেন্ট রোধে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মুভমেন্ট পাস। এ পর্যন্ত ১৮ কোটিরও বেশি বার অনলাইনে ট্রাই করা হয়েছে এই পাসের জন্য। প্রায় জনশূন্য রাস্তাঘাটও প্রমাণ করে জন চলাচল নিয়ন্ত্রণে এই পদ্ধতি কাজ লেগেছে। তবে, প্রকৃতিগতভাবেই নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধ পছন্দ করে না মানুষ।