বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবের নেপথ্যে চীনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। কিন্তু এমন অভিযোগের পক্ষে কোনও অকাট্য প্রমাণ কেউ তুলে ধরতে পারেনি। চীনও বারবার চেষ্টা করেছে তাদের ঘাড় থেকে দায় নামিয়ে ফেলতে। কিন্তু সম্প্রতি একটি নথি ফাঁস হয়েছে তাতে পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে ‘সার্স করোনাভাইরাস’-কে জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের আলোচনার কথা উঠে এসেছে।
ফাঁস হওয়া গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, চীনের বিজ্ঞানী ও সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সার্স করোনাভাইরাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন।
অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ডট কম ডট অ্যাইউ-এর খবর অনুসারে, ওই গবেষণাপত্রের শিরোনাম 'দ্য আনন্যাচারেল অরিজিন অব সার্স অ্যান্ড নিউ স্পেসিস অব ম্যানমেড ভাইরাসেস অ্যাজ জেনেটিক বায়োউইপন্স'। এতে পূর্বাভাস হিসেবে বলা হয়েছে, পরবর্তী বিশ্বযুদ্ধে লড়াই হবে জৈব অস্ত্র দিয়ে এবং সার্স করোনাভাইরাসকে জৈব অস্ত্রের নতুন যুগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই ভাইরাসকে কৃত্রিমভাবে মনুষ্যরোগের ভাইরাস হিসেবে পরিণত করা যাবে, পরে এটিকে অস্ত্রে পরিণত করাও সম্ভব হবে এমন উপায়ে যা আগে কখনও হয়নি।
এই গবেষণার তথ্য ফাঁস করেছেন চীনেরই এক শীর্ষ স্থানীয় বিজ্ঞানী। লি-মেং ইয়ান নামের ওই চীনা ভাইরোলজিস্ট চীনা ভাষায় লেখা কিছু নথি তিনি ইংরেজিতে অনুবাদ করে টুইট করেছেন। এসব টুইটে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘সার্স-কোভ-২’ ভাইরাসটি চীনের সরকারি গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে। এবং সামরিক বিভাগের বিজ্ঞানীরা সার্স করোনা ভাইরাসকে জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করছেন।
অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, এই ভাইরাসের জিন ইচ্ছে মতো পরিবর্তন করে মানব শরীরে ঘাতক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
এই নথি প্রকাশ্যে আসার পর চীনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
টুইটারে চীনা বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, অধ্যাপক ও মেজর জেনারেল ডেজহং জুর নেতৃত্বে সিসিপি'র একদল সামরিক ভাইরোলজিস্ট এই ভাইরাসকে একটি আদর্শ জেনেটিক অস্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি আরও বলেছেন, এই ভাইরাসটি এমনভাবে তৈরি সম্ভব যাতে মনে হবে এটি প্রাকৃতিক প্যাথোজেনে সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বৈজ্ঞানিক ও ভাইরোলজিক্যাল এমন কিছু প্রমাণ থাকবে যাতে করে কেউ জৈব অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলতে পারবে না। ফলে আন্তর্জাতিক বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না।
চীনা ভাইরোলজিস্টের দাবি, এটির ব্যবহার শুধু সামরিক যুদ্ধে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি বেসামরিক ক্ষেত্রে আতঙ্ক ছড়াতে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে (শত্রু রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে) রাজনৈতিক ও কৌশলগত সুবিধা আদায়ে কাজে লাগানো যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস জানায়, দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
The mentioned breaking document to “predict World War III as biological war” is the PLA’s novel bioweapon textbook (by General Dezhong Xi, 2015) I’m translating into English with our Chinese volunteers! The brief introduction is in the 3rd Yan Report