নির্বাচন কমিশনের শর্তানুযায়ী দলের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে তৎপর হয়েছে বিএনপি। শনিবার (১২ জুন) ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তা গণমাধ্যমে তুলে ধরবেন।
নির্বাচন কমিশনের শর্তানুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোতে ৩০ শতাংশ নারীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। গত বছরের ডিসেম্বরে কমিশনের এই বাধ্যবাধকতার মেয়াদ শেষ হয়েছে। গত ৭ জুন নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে দলগুলোর হালনাগাদ তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়। এর আগে, ২০১৭ সালেও দলগুলোর হালনাগাদ তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। ওই প্রক্রিয়ায় পরে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি।
স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের চিঠির সূত্র ধরেই নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতভাবে বৃদ্ধি করতে আগ্রহী বিএনপি। শনিবার (১২ জুন) বিকালে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার উপায় নিয়েও মতামত দেন সদস্যরা। পরে শীর্ষ নেতৃত্বের পরামর্শে একটি বিশেষ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। স্থায়ী কমিটির দুইজন সদস্য কমিটির নেতৃত্ব দিতে পারেন।
স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আজকের বৈঠকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন প্রক্রিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর, ভ্যাকসিনের সংকট, সীমান্তে করোনার বিস্তার ও লকডাউন ‘অকার্যকর’ বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর হাসপাতালগুলোতে বেড সংকট, আইসিইউ সংকট নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন কমিটির সদস্যরা।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নাগরিক সমাজের একটি অংশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করায় বিরোধিতা করা হয়েছে। তারা মনে করছেন, এই উদ্যোগ সাংবিধানিকভাবে সাংঘর্ষিক। এই উদ্যোগ পরবর্তী নির্বাচনের নতুন তরিকা। বিএনপির প্রবীণ নেতা জমির উদ্দিন সরকার বলছেন, এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির সিনিয়র নেতারা সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোতে আন্দোলনের প্রসঙ্গে কথা বলছেন। এসব বক্তব্য আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবেই বলা হচ্ছে। বিশেষ করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হওয়ার প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে চায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
যদিও ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের ভাষ্য, দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুরো শেষ করেই পরবর্তী পরিকল্পনার দিকে যেতে হবে।