গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ছেলের প্রেমের অপরাধে রিকশাচালক ছকু মিয়াকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৮ দিন পর সোমবার (২১ জুন) দুপুরে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোকমান হোসেন ও সাদুল্লাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল হোসেন, এসআই মো. ইমরান হোসেন ও এএসআই তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সাদুল্লাপুর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ রানা বলেন, আদালতের নির্দেশে ছকু মিয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ছকু মিয়ার লাশ উত্তোলনের খবর পেয়ে দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাড়াও আশপাশের কয়েক গ্রামের শতশত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।
ছেলের প্রেমের অপরাধে জরিমানা করা ৫০ হাজার টাকা জোগাতে গত ৩ জুন গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় রিকশা চালাতে গিয়ে মারা যান ছকু মিয়া। পরদিন তার লাশ বাড়িতে এনে তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়। গত ১৫ মে ছকু মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রাতভর আটকে রেখে মারধর করেন পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের মন্টু মিয়া ও আলমগীরসহ পাঁচ ভাই।
এ ঘটনায় ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল হক বাবাকে হত্যার অভিযোগ এনে ১৬ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন। আদালতের বিচারক শবনম মুস্তারী সাদুল্লাপুর থানা পুলিশকে মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে লাশ উত্তোলনসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ জুন দিন ধার্য করেন।
মামলার বাদী মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে মন্টু মিয়ার মেয়ে আমার হাত ধরে পালিয়ে যায়। পরে আমার রিকশাচালক বাবা ছকু মিয়াকে ধরে নিয়ে গিয়ে রাতভর নির্যাতন চালায় মেয়ের বাবাসহ তার পাঁচ ভাই। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে সালিস বৈঠকে আমার দরিদ্র পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি বাড়ির একটি ঘরও বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। প্রভাবশালী পাঁচ ভাইয়ের নির্যাতনে বাবার মৃত্যু হয়েছে। বাবার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই আমি।