দেশে তিন দিন ধরে ক্রমান্বয়ে রোগী শনাক্ত এবং দৈনিক মৃত্যু বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে নতুন শনাক্ত ও মৃত্যু আরও বেড়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৪৬ জন, যা গতকাল (১ আগস্ট) ছিল ২৩১ জন, তার আগের দিন (৩১ জুলাই) ছিল ২১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৪৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ২১ হাজার ১৬২ জন।
গত ২৮ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়ায়। সে হিসাবে সব শেষ এক হাজার মৃত্যু হলো পাঁচ দিনে।
করোনা গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮৯ জন, যা গতকাল ছিল ১৪ হাজার ৮৪৪ জন। আর তার আগের দিন শনাক্ত হয়েছিলেন নয় হাজার ৩৬৯ জন। এদের নিয়ে দেশে করোনায় সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হলেন ১২ লাখ ৮০ হাজার ৩১৭ জন।
সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়ার মধ্য দিয়েই অধিদফতর জানাচ্ছে, রাজধানী ঢাকার করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড চার অন্যতম বড় সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত সাধারণ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন অতিরিক্ত রোগী। সেই সঙ্গে ঢাকার সাত হাসপাতালে আইসিইউ ( নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বেড ফাঁকা নেই।
অধিদফতর জানাচ্ছে, রাজধানী ঢাকায় এখন ১৭টি সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নির্ধারিত সাধারণ শয্যার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি করা হয়েছে।
অধিদফতরের তথ্য থেকে জানা যায়, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত ১৬৯ বেডের বিপরীতে অতিরিক্ত ১২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নির্ধারিত ২৭৫ জনের বিপরীতে ৭৯ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্ধারিত ৭০৫ বেডের বিপরীতে অতিরিক্ত ৬৬ জন আর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্ধারিত ২৬৩ বেডের বিপরীতে অতিরিক্ত ৭৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
অন্যদিকে, ১৭ হাসপাতালের মধ্যে তিনটি হাসপাতালে সাধারণ শয্যা থাকলেও আইসিইউ নেই। হাসপাতালগুলো হচ্ছে, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতাল।
বাকি হাসপাতালগুলোর মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০ আইসিইউ বেড, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬ বেড, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২০ বেড, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৪ বেড, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০ বেড, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫ বেড, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আট বেডের সবকটিতে রোগী ভর্তি।
অন্যান্য হাসপাতালের মধ্যে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ২৬ বেডের মধ্যে একটি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ছয় বেডের মধ্যে একটি, টিবি হাসপাতালে চার বেডের মধ্যে একটি, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০ বেডের মধ্যে দুটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বেডের মধ্যে একটি, ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে ২১২ বেডের মধ্যে নয়টি আর পঙ্গু হাসপাতালে তিন বেডের মধ্যে তিনটি ফাঁকা রয়েছে।
অর্থাৎ, রাজধানী ঢাকায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া ১৭ হাসপাতালের নির্ধারিত তিন হাজার ৯৩০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ফাঁকা রয়েছে মাত্র ৮৮৭টি আর ৩৮৪টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ফাঁকা রয়েছে মাত্র ১৮টি।