কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিচলিত হওয়ার কোনও কারণ নেই, বাংলাদেশ আমার আপনার সবারই। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে মনে করে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কারণ নেই। তবে শুধু প্রশাসন দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না।’
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের চকবাজারের চন্দনপুরা এলাকায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্তের বাসায় যান ব্যারিস্টার নওফেল। তার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘সরকার শতভাগ তৎপর আছে। কোনোভাবেই বলতে পারব না যে, অবহেলা আছে। শতভাগ সচেষ্ট আছি। ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগের ঘটনাগুলোতেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি (রানা দাশ গুপ্ত) একজন আইনজীবী, তিনি জানেন বিচারিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতাতো আছেই। বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘শুধু প্রশাসন দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না। এটি বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর বাস্তবতা। আমরা একটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আন্দোলনের কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রীতির সমাবেশ ও মিছিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সাংগঠনিভাবে দল মাঠে নেমেছে।’
নওফেল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে শান্তি সমাবেশ করছি। সব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভালোবাসা যদি না থাকে তাহলে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি বজায় রাখা কঠিন। তাকে (রানা দাশ গুপ্ত) আশ্বস্ত করেছি, আমরা সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখবো। এই জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি দেশের সংখ্যালঘুদের বিতাড়িত করতে চাচ্ছে, সেটি তাকে (নওফেলকে) বলেছি। সম্প্রতি ঘটনা ছাড়াও এই সরকারের আমলে সব ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এগুলো যাতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, সে বিষয়ে বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামে একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গতকাল (বুধবার) টিভিতে দেখলাম, তার নামের আগে একটা শব্দ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেটি হলো, ভবঘুরে। এই পর্যন্ত যত বড় ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ধরেছে, তারা সবাই পাগল, ভবঘুরে। কিন্তু এই পাগলের পেছনে কে? নতুন কোরআন কোথা থেকে আনলো, কে দিলো? আর হনুমানের গদাটা এমনভাবে সরালো যাতে হাতের কিছু না হয়। সেখানে আবার নতুন কোরআন দিয়ে দিলো। এটি কোনও ভবঘুরের কাজ হতে পারে না। এর পেছনে কে? তাঁকে খুঁজে বের করতে হবে।’
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। চক্রান্তকারীরা পেছনে আছে। তাদেরকে বের করে আনার দায়িত্ব এখন রাষ্ট্র ও সরকারকেই নিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি আছে। রাজনৈতিক দলের গাফিলতি আছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।’