বিদেশি ঋণ নির্ভরতা দেশের নীতি নির্ধারণে বিদেশি প্রভাব বাড়িয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন খাতে বিদেশি সহায়তা গ্রহণ করতে গিয়ে আমাদের অনেক শর্ত মানতে হয়, যার ফলে রাজস্ব আদায় ও বিদেশি বিনিয়োগ—দুই দিকেই সমস্যা তৈরি হয়।’
সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর পুলিশ প্লাজায় মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের করনীতি কবে প্রণয়ন হবে, কত বছরে তা বাস্তবায়ন হবে—এই বিষয়ে কোনও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই। অথচ উন্নত দেশগুলোতে করনীতি একটি রাজনৈতিক ইস্যু। অস্ট্রেলিয়ায় শুধু ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাবের কারণে একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জাতীয় ঐক্যের অভাব স্পষ্ট। আমরা দলীয় স্বার্থে বিভক্ত। চিকিৎসক ও শিক্ষকদের মধ্যেও দলভেদে বিভাজন রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও আমরা সামগ্রিক উন্নয়ন করতে পারছি না।’
দেশের ভিশনের অভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সামান্য অসুস্থ হলেও আমরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছুটে যাই। তাহলে দেশের স্বাস্থ্য খাত কীভাবে উন্নত হবে? আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে, নিজস্ব সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।’
বিভিন্ন সময় ঘোষিত রাজনৈতিক কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘২১ দফা, ১১ দফা কিংবা ৬ দফার মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি আমাদের আছে বটে, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনও রূপরেখা নেই।’
বাজেট পর্যালোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাঈদি সাত্তারসহ অন্যরা। বক্তারা কর সংস্কার, দক্ষতা উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।