দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৩ জুন) পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসেব পদ্ধতিতে মোট (গ্রস) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৬ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে ১৮৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে গিয়েছিল ২০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে। এরপর থেকে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে একাধিক ঋণ সহায়তার ফলে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, শুধু জুন মাসের প্রথম ২১ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ১ হাজার ৯৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮ কোটি ডলার বা ৪ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি অর্থবছরের (জুলাই-জুন) ১১ মাসে প্রবাসী আয় দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।
রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বৈদেশিক ঋণ সহায়তাও। চলতি জুন মাসেই আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা থেকে মোট প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ ছাড় হয়েছে। এর মধ্যে এআইআইবি একাই ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রবাসী আয় ও বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে আগামী মাসের মধ্যে রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঈদুল আজহার আগে টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রবাসীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন, যা প্রমাণ করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বাড়ছে। এটি দেশের মুদ্রানীতি ও বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থার জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় মুহূর্তে অর্থাৎ জানুয়ারি ২০২৫ শেষে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে কিছুটা নিম্নমুখী হলেও এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রিজার্ভের গ্রাফ।