X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মহাসড়কে ছদ্মবেশী দস্যু

তুষার আবদুল্লাহ
২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:৪৭আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:৪৯

তুষার আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগের আজ উদযাপনের দিন। উৎসবের দিন। দলের সভাপতি ও দেশের প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার বেশ কিছু অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানাতে আওয়ামী লীগ এই আয়োজন করেছে। সকালে সড়কে বা পথে নেমেই উন্নয়নের মহাসড়কের নানা প্রতিকৃতিসহ নেতাকর্মীদের মিছিল দেখতে পেলাম। অবশ্য রাজধানী সেজে উঠছিল সপ্তাহখানেক ধরেই। দলের সভাপতিকে সংবর্ধনা দেওয়ার পেছনের আরেক উপলক্ষ হচ্ছে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় শক্তি প্রদর্শন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলের শীর্ষ নেত্রীকে জনসমর্থন বা কর্মীর সামর্থ্য বোঝানো। অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে দলের সভাপতির কাছ থেকে নির্দেশনা জেনে নেওয়া। ধারাবাহিক সরকারে থাকার কারণে বিগত ও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা ছিল।  ধারাবাহিক সরকারের বড় গুণ এটি। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায়  অনেক বড় প্রকল্পও গ্রহণ করতে পেরেছে আওয়ামী সরকার তাদের দুই আমলে। ভোটের রাজনীতি যারা করেন, তারা নির্বাচনের আগে বা যে কোনও উপলক্ষের সুযোগ নিয়েই ঢোল-বাদ্য বাজাবে এটা স্বাভাবিক। বিগত সব সরকারই একইভাবে বাদ্য বাজিয়েছে। ভোটাররা সেই বাদ্যে কতটা মজেছে, সেটি ভোটের আমলনামা দেখলেই বোঝা যাবে। তবে সমস্যার দিকটি অন্য জায়গায়।

উন্নয়নের মেঠোপথ, সড়ক বা মহাসড়ক যাই বলি না কেন, সেখানে সব রাজনৈতিক দলই ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে চায়। উন্নয়নের স্বপ্ন কারও সংকীর্ণ, কারও অসীম। আওয়ামী লীগ দাবি করছে, দলটি দেশবাসীকে অসীম উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়ে মহাসড়কের যাত্রী করেছে। উন্নয়ন প্রক্রিয়া যেমন ভোগান্তির, তেমনি উপভোগেরও। সুতরাং সরকারকে দুই স্বাদের প্রতিক্রিয়া সইয়ে যেতে হয়। উন্নয়ন নির্মাণ প্রক্রিয়ার সময় দুর্ভোগের দায় নিতে হয়, তবে উপভোগের বিষয়ে ভোক্তারা সাধারণত মৌনই থাকেন। ভোটে খুব একটা কৃতজ্ঞতার প্রকাশ ঘটান, তা নয়। তবু রাজনৈতিক দলকে নিজেদের বিজ্ঞাপন প্রচার করেই যেতে হয়। তবে উন্নয়ন যে একেবারে জলে ভেসে যায় তা কিন্তু নয়। উন্নয়নের সঙ্গে যদি মানুষের অধিকারের যোগ ঘটানো যায়, তাহলে ফেরত পাওয়া যায় দ্বিগুণ। এক্ষেত্রে স্থাবর বা দৃশ্যমান উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে অধিকারের উন্নয়নের কথা। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা, আবাসনসহ যে সেবাগুলো গ্রহণ করে, সেখানে তার তথ্য জানার অধিকার থাকতে হবে। কেন সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে বা হচ্ছে সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার অধিকার থাকতে হবে সাধারণের। সাধারণ মানুষ যে কর দিচ্ছে, সেই কর কোন খাতে খরচ হচ্ছে, তা জানার অধিকার নিশ্চয়ই রাষ্ট্রের মালিক বলে সংবিধানে স্বীকৃত জনগণের থাকা উচিত। এই অধিকারগুলো নিশ্চিত হলে উন্নয়নকে উপভোগ করার সুযোগ পাবে জনগণ।

মেঠোপথ, সড়ক ও মহাসড়কে কেবল সাধারণ পথচারী বা যাত্রীরাই চলাচল করে, এমন নয়। ছিনতাইকারী, ডাকাত-দস্যুরাও চলাচল করে। উন্নয়ন সড়ক-মহাসড়কের বেলাতে যে এমন ঘটছে বলে গুঞ্জন, অভিযোগ রয়েছে। মহাসড়কের সাফল্য কেড়ে নিতে দস্যুরা সক্রিয় আছে। তারা ছদ্মবেশে মিশে গেছে সাধারণ জনগণের সঙ্গে। আর একটু খোলাসা করে বললে বলতে হয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে। যেহেতু ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ, তাই সেই দলে এমন ছদ্মবেশীরা আছে বলে প্রচার আছে। প্রচার মিথ্যে এমন বলা যাবে না। এই ছদ্মবেশীদের প্রতাপে প্রকৃত নেতাকর্মীরা ও সাধারণ জনগণ মহাসড়কচ্যুত। আওয়ামী লীগের সাধারণ বা প্রাকৃতিক কর্মীদের শঙ্কা-সাফল্য ছিনতাই বা ডাকাতি হয়ে যেতে পারে। তাই দলকে, জনগণকে সাবধান হতে হবে। ভোটকে সামনে রেখে এই সতর্কতা জরুরি। অতীতের সব রাজনৈতিক দলকে এই ফল ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের ইতিহাস থেকে শেখার রেওয়াজ নেই বলেই আবারও সতর্ক করে দিচ্ছেন তারা।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি

/এসএএস/এমএনএইচ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ