বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দুই সদস্যকে টোপ দিয়ে আটক করেছেন নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকার বস্তিবাসী। আটকের পর দুজনকে পুলিশে হস্তান্তর না করে র্যাব-৮-এর কর্মকর্তাদের কাছে দুই কেজি গাঁজা এবং হ্যান্ডকাফসহ সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
আটককৃতরা হচ্ছে– বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এসআই ওবায়েদুল্লাহ খান এবং সিপাহি মো. সবুর।
বস্তিবাসী মো. রতন বলেন, ‘এলাকা মাদকমুক্ত করতে মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন তারা। এ সময় দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত সোহাগ ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা স্বীকার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এসআই আজিজ জোর করে তাদের দিয়ে গাঁজা বিক্রি করাচ্ছে। তারাও গাঁজা বিক্রি করতে চায় না।’
রতন আরও বলেন, ‘সোহাগ বিষয়টি জানানোর পর আজ সোমবার ভোররাত থেকে পাহারা বসানো হয়। কিন্তু আজিজ না এসে তার দুই সহযোগীকে পাঠায়। তারা একটি মোটরসাইকেলে চেপে বস্তিতে প্রবেশ করে। এরপর তাদের আটকে একটি ব্যাগ থেকে দুই কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র ও হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানানো হলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশের প্রতি আস্থা না থাকায় র্যাব-৮-এর কর্মকর্তাদের আসতে বলা হয়। পরে র্যাব কর্মকর্তারা আসলে তাদের কাছে আটক দুজনকে গাঁজাসহ সোপর্দ করা হয়।’
দুজনকে আটকের বিষয়ে মাদকবিক্রেতা সোহাগ বলে, ‘প্রতিবেশীদের চাপের কারণে দুই দফায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এসআই আজিজের বিকাশ নম্বরে একবার পাঁচ হাজার এবং দ্বিতীয়বার ২২ হাজার টাকা পাঠানো হয়। ওই টাকা বাবদ দুই কেজি গাঁজা দেওয়ার কথা জানায় আজিজ। বিষয়টি প্রতিবেশীদেরও অবহিত করা হয়।’
এদিকে, সোহাগের স্ত্রী ফাঁদে ফেলার ২৭ হাজার টাকা ফেরত দিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। তারা আর কোনোদিন মাদকের সঙ্গে জড়িত হবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. সরোয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ট্রিপল নাইন থেকে বিষয়টি জানার পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। আটক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দুই সদস্যকে র্যাব-৮-এর কাছে তুলে দেন বস্তিবাসী। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান, সে যেই হোক না কেন। যারা আটক হয়েছে তাদের বিষয়টি মৌখিকভাবে মহাপরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর এজাহার দেখে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।’
এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে চাকরি বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।