এক সপ্তাহ পাথর উত্তোলন কাজ বন্ধ থাকার পর দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনিতে (মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড) উত্তোলন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালের শিফট থেকে পুরোদমে পাথর উত্তোলন শুরু হয়েছে।
মধ্যপাড়া পাথরখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ডিএম জোবায়েদ হোসেন জানান, জিটিসি ও শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা আলোচনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার শিফট থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়ে খনি থেকে পুরোদমে পাথর উত্তোলন শুরু করেছেন।
জানা যায়, খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন পরিস্থিতির কারণে গত ২ জুলাই খনির কার্যক্রম (পাথর উত্তোলন) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেড কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) ও জার্মানিয়া করপোরেশন লিমিটেড (জিসিএল)। ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খনি থেকে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এক সপ্তাহ পর বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে জিটিসি ও শ্রমিক উভয় পক্ষের বৈঠকে সমঝোতা হয়। সমঝোতার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খনি থেকে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যায়, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি প্রতিদিন তিন শিফটে শ্রমিকদের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এতে প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন হয়।
কিছুদিন ধরেই জিটিসির অধীনে নিয়োগ হওয়া অস্থায়ী শ্রমিকরা প্রোডাকশন প্রফিট বোনাসের দাবি জানিয়ে আসছন। ঈদের আগে এই বোনাস দেওয়ার দাবি জানালেও তা দেওয়া হয় ঈদের পর। এই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করায় খনির ব্লাস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলীকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার প্রতিবাদ ও অব্যাহতি দেওয়া শ্রমিকদের পুনরায় স্বপদে বহালের দাবিতে শ্রমিকরা বুধবার থেকে পাথর উত্তোলনসহ সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
শ্রমিকদের আন্দোলন কোনও খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য খনি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দেয় খনি উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি জানায়, যারা এই খনিতে কাজ করছেন তারা সবাই অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করেন। অসন্তোষ সৃষ্টি করায় ৪ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে আলোচনার পর এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পাথর উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।