বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরুবা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয়রা। ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে বক্তব্য দিতে গিয়ে সবার সামনে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের ট্রফি ভেঙে ফেলায় তার বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ করা হয়।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামের নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আলীকদমের পান বাজার চত্বরে সমাবেশ করেন চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম বলেন, ‘ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে ট্রফি বিতরণ না করে ভেঙে ফেলেছেন ইউএনও মেহরুবা ইসলাম। এমন কাজ করে তিনি অন্যায় করেছেন। খেলোয়াড়দের প্রতি অবিচার করেছেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি ও স্থানীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আলীকদমের জনগণকে অসম্মান করেছেন। এর আগেও তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনওকে অপসারণ করা না হলে আলীকদমকে অচল করে দেওয়া হবে। আগামীকালের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ইউএনওকে এখন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবে—এই অপেক্ষায় আছে আলীকদমবাসী।’
এর আগে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ট্রফি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মেহরুবা ইসলাম।
আরও পড়ুন: খেলার ফল না মানায় ট্রফি ভাঙলেন ইউএনও
স্থানীয়রা জানান, আবাসিক স্বাধীন যুব সমাজের উদ্যোগে শুক্রবার আবাসিক জুনিয়র একাদশ বনাম রেপারপাড়া বাজার একাদশের ফাইনাল খেলা ছিল। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও মেহরুবা ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩৫ মিনিট করে ৭০ মিনিট খেলার পর কোনও দলের গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। খেলায় চার টাইব্রেকারে আবাসিক জুনিয়র দলের চার গোল হয় এবং টাইব্রেকার রেপারপাড়া একাদশের তিনটি গোল হয়। এতে আবাসিক জুনিয়র একাদশ চ্যাম্পিয়ন এবং রেপার পাড়া একাদশ রানার্সআপ হয়।
খেলার ফলাফল নিয়ে হট্টগোল শুরু হলে উপস্থিত জনসাধারণকে শান্ত করার জন্য ইউএনও বলেন, ‘খেলায় হার-জিত থাকবে, এতে কারও মন খারাপের কারণ নেই’। তখন উপস্থিত দর্শকদের কাছে খেলার ফলে সন্তুষ্ট কিনা জানতে চান তিনি। এ সময় কয়েকজন বলেন, ‘খেলার ফল মানি না’। এরপর ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে খেলার চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ট্রফি ভেঙে ফেলেন।
বিষয়টি স্বীকার করে মেহেরুবা ইসলাম বলেন, ‘খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় হঠাৎ কয়েকজন এসে বলেন, খেলার ফল তারা মানেন না। তখন আমি আবারও খেলতে বলি। কিন্তু তারা বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন এবং ট্রফি নেবেন না বলে জানান। প্রয়োজনে ট্রফি ভেঙে ফেলতে বলেন। আমি পরিস্থিতি সামাল দিতেই ট্রফিগুলো ভেঙে ফেলেছি।’