ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘অনেকেই মনে করেছিল বাংলাদেশের অবস্থান শ্রীলঙ্কার মতো হবে। কিন্তু বাংলাদেশ তা হয়নি। বাংলাদেশের অবস্থান শ্রীলঙ্কা থেকে অনেক শক্তিশালী। করোনা মহামারী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ডলার সংকটের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিপর্যয় হলেও খাদ্য উৎপাদন ঠিক থাকায় সেই বিপর্যয় আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।’
রবিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক কলহ তৈরি হচ্ছে। এই সমস্যা নিরসনে আমরা ভূমি বণ্টননামা কার্যকর করতে যাচ্ছি। এ ছাড়া ভূমি নিয়ে অপরাধ কমাতে আমরা আইন প্রণয়নও করতে যাচ্ছি।’
চট্টগ্রামের উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে নিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, আনোয়ারায় অর্থনৈতিক জোন, লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। ফলে নান্দনিকতায় রূপ পেয়েছে নদী-পাহাড় ও সমুদ্রবেষ্টিত এই চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি ট্যুরিজম সেক্টরে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পর্যটক আকর্ষণ করতে চিটাগাং চেম্বারের উদ্যোগে একটি ট্যুরিজম ফেয়ার আয়োজন করার উপর গুরুত্বারোপ করছি।’
তিনি চট্টগ্রামে স্থায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও একটি আন্তর্জাতিক মানের বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টার করার জন্য নগরীর কাট্টলী ও সী-বিচ এলাকায় ভূমি বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. এ. লতিফ বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শক্তিশালী অর্থনীতির দেশেরও ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশ দেউলিয়া হওয়া নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে সব সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম তথা দেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম চেম্বার।’
খেলার মাঠে মেলার পরিবর্তে রপ্তানি পণ্য প্রসারের জন্য চট্টগ্রামে পতেঙ্গা সী বিচ ও বে-টার্মিনাল সংলগ্ন মধ্যবর্তী এলাকায় মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যু বরাদ্দের আহবান জানান তিনি।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরকে আরো গতিশীল করতে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল দ্রুত চালু এবং বে-টার্মিনাল প্রকল্পও দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য ভূমিমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান তিনি।
এতে চেম্বার পরিচালক ও সিআইটিএফ-২০২৩ কমিটির চেয়ারম্যান এ. কে. এম. আক্তার হোসেন ও কো-চেয়ারম্যান মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) বক্তব্য রাখেন। এ সময় চেম্বার পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, ইফতেখার ফয়সাল, এস. এম. তাহসিন জোনায়েদ ও তানভীর মোস্তফা চৌধুরীসহ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে জুরি বোর্ড কর্তৃক শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন এবং স্টল এবং দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
মেলা আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত চলবে।