মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা কাঁপছে। পাশাপাশি দেশটির সীমান্ত এলাকার কয়েকটি পয়েন্টে আগুন জ্বলছে।
রবিবার (১৪ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টেকনাফের নাইট্যং পাড়া, পৌরসভার জালিয়া পাড়া, সদরের নাজির পাড়া ও সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তের গ্রামগুলোতে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত সীমান্তে ওপারের বিকট গোলার শব্দে এপারের সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে আতঙ্ক বেড়েছে। পাশাপাশি নাফ নদের ওপারে কয়েকটি স্পটে আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে। এ ছাড়া সীমান্তে যাতে অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা সৈয়দ হোছাইন বলেন, রাতভর সীমান্তজুড়ে বিকট গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। এতে এখানকার বসবাসকারী মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। এ ছাড়া সকাল থেকে সীমান্তের ওপারে আগুন জ্বলছে। এভাবে চলতে থাকলে আবার রোহিঙ্গাদের ঢল নামতে পারে।
সীমান্তের গোলার বিকট শব্দের কারণে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের সীমান্তের বাসিন্দা মাহাবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আবার দুই দিন ধরে সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া নাফ নদের ওপারে আগুন দেখা গেছে।
জানা গেছে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান এবং যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবসময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সকালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলমান রয়েছে। ফলে টেকনাফের টেকনাফের নাইট্যং পাড়া, পৌরসভার জালিয়া পাড়া, সদরের নাজির পাড়া ও সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপের ওপারে আশিক্কা পাড়া, সুদাপড়া, পাতংজা, পেরাংপুলে আগুনের ধোঁয়া দেখা গেছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, আজকেও সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে নতুন করে যাতে কেউ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছি।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। নাফ নদের ওপারে আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।