বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের দেশের গর্ব। তিনি সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা সবাই সমর্থন করেছি। কারণ তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে চিনিয়েছেন। কর্মের মাধ্যমে নোবেল অর্জন করেছেন। তিন মাসে আশা করেছিলাম, সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু দেননি। দেশ কীভাবে চলবে তা ৩১ দফার মাধ্যমে বহু আগেই বিএনপি তুলে ধরেছে। সরকার যত দ্রুত নির্বাচন দেবে ততই জাতির জন্য মঙ্গল, দেরি হলে সমস্যাগুলো বাড়বে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে পরামর্শ করতে হবে।’
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার আদালত মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্ম এখন পর্যন্ত ভোট দিতে পারেনি, ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। তারা ভোট দিতে চায়, বয়স্করা জীবনের শেষ ভোট সুষ্ঠু পরিবেশে দিতে চায়। ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের দায়িত্ব দিন। তারা দেশ চালাবে। ভোট দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। মানুষ ভোটের মাধ্যমে পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে চায়। আওয়ামী লীগ ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। সুযোগ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের জনগণ ফ্যাসিবাদ, আধিপত্য আর মেনে নেবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন শেষ হয়নি। জনগণের অধিকার, ভোটাধিকার, বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে, দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে পারলেই এই আন্দোলন শেষ হবে।’
গণতন্ত্রের জন্য অনেক প্রাণ দিতে হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব, ‘এবারের আন্দোলনেও ফেনীর অনেককে হত্যা করা হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ২০ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে হত্যা ও ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করেছে। এখনও সন্তান ও বাবাহারা মানুষজন স্বজনদের ফেরার অপেক্ষা করছেন। আমরা মামলা নিয়ে কারাগারে গেছি। কিন্তু মাথানত করিনি। এই সংগ্রামের মাধ্যমে আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ ও স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রমুখ।