নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে সিরিয়া, লেবানন কিংবা আফগানিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছে। পছন্দ আপনার, আপনারা কী করবেন। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। সরাসরি বলে দিয়েছি, আমরা লড়াই করবো। সেই লড়াইয়ে জিতবো। অন্যায় কখনও ন্যায়ের সঙ্গে পারে না। সত্যের সঙ্গে কখনও অসত্য পারে না। আজকে তারা আবার জেগে উঠেছে। আমি বলবো না, তারা সবাই খারাপ। কিন্তু যারা রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাদের রাজনীতিকে আমি গণতান্ত্রিক রাজনীতি বলতে পারি না।’
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সমরক্ষেত্র এলাকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে সবকিছু হারিয়ে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করছেন। করোনা এবং যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশের জিডিপি আজকে ভারতের চেয়ে চার পারসেন্ট বেড়ে যেত। নারায়ণগঞ্জের এই আসনে আমার বড় ভাই উন্নয়ন করে একভাবে (নিজের টাকায়) আর আমি করি অন্যভাবে। আমি নাটক খুব ভালো পারি। কোন মন্ত্রীর টেবিলে কত জোরে থাপ্পড় মারতে হয় আমি খুব ভালো জানি। কোন থাপ্পড় দিলে কত হাজার কোটি টাকা আসবে এটা আমি খুব ভালো জানি। আমি থাপ্পড় দিই, টাকা চলে আসে। এটা কোনও সমস্যা না। পরে আবার ওনাকে জড়িয়ে ধরে সব ঠিকঠাক করে নিই, কোনও সমস্যা হয় না।’
বহির্বিশ্বের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আজকে অনেকে ইসলামের নামে রাজনীতি করে। আমি অবাক হয়ে যাই, প্রধানমন্ত্রী প্যালেস্টাইনের মুসলমানের পক্ষে কথা বলেন। ফিলিস্তিনিদের ওপর কী নির্মমতা চলছে! কই, কেউ তো কোনও কথা বলে না। বিশ্বের ৩৩টা দেশে নির্বাচন হয়, কোনও কথা নাই। আর বাংলাদেশের নির্বাচন হলে সবাই মানবাধিকার ভোটাধিকারের কথা বলেন। আমরা কি পরাধীন রাষ্ট্র? ত্রিশ লাখ শহীদের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি, কারও দয়ার দান দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা দেয় নাই।’
অক্টোবরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মাস খুব ক্রুশিয়াল (সংকটময়) হবে। অনেক কিছু করার চেষ্টা হবে। অনেক ঝড় আসবে। হয়তো শামীম ওসমান পড়ে যাবে। প্রয়োজনে বোমা হামলা হবে। আবার হয়তো চন্দনশীলের মত কেউ দুই পা হারাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতবো, ইনশাআল্লাহ।’
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ‘২৮ তারিখ জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। আপনারা কেউ ভয় পাইয়েন না। বন্দরে অনেকে আমার সঙ্গে মিটিং করে আবার আমার সঙ্গেই এখন ফণা তুলছেন। এই ফণা থাকবে না কিন্তু। এটা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলে গেলাম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। আমি যেই দলই করি না কেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আমি হবো নাকি শামীম এমপি হবে এটা বিষয় না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার মাধ্যমে আগামীর সরকার গড়তে হবে। এই দায়িত্ব আপনাদের প্রত্যেকের ইমানি দায়িত্ব।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দনশীল, জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানের সহধর্মিণী নাসরিন ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, বিকেএমইএ‘র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ।