রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পৌর পার্কিং ও অটোরিকশা মালিক সমিতির নামে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশার চালকরা। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার অটোরিকশা বন্ধ রেখে চালকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
চালকদের দাবি, পার্কিং না করেও পৌরসভায় পার্কিং চার্জ বাবদ টাকা আদায় এবং দৌলতদিয়া ঘাটে যতবার যাচ্ছে ততবারই তাদেরকে পার্কিং চার্জ বাবদ জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুই শতাধিক অটোরিকশা বন্ধ করে গোয়ালন্দ উপজেলা কোর্ট চত্বর মাঠে জড়ো হন তারা। এ সময় কয়েকশ চালক থেমে থেমে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ পৌরসভার সামনেও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
চালকরা বলছেন, তাদের কষ্টের রোজগারের টাকা থেকে এভাবে চাঁদা দিতে পারবেন না। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই কেজি চালের টাকা শুধু চাঁদা দিতে হয়। অনেকের অটোরিকশা ভাড়া করা, ভাড়া বাবদ টাকা দিতে হয়। প্রতিদিন ব্যাটারি চার্জ বাবদ টাকা দিতে হয়। এরপর নানা সময় নানা ধরেনর যান্ত্রিক ত্রুটি তো আছেই। সবমিলে প্রতিদিনের রোজগারের বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়। তাহলে বাকি টাকা দিয়ে এই বাজারে কীভাবে সংসার চালাবেন চালকরা।
হাসান নামের এক চালক বলেন, পৌরসভায় ঢুকলেই ৩৫ টাকা, দৌলতদিয়ায় ঢুকলেই ২০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। অনেকে যাত্রী নিয়ে রাজবাড়ী যায়। সেখানেও ৪০ টাকা দিতে হয়। প্রতিদিন একেকজন চালককে প্রায় ১০৫ টাকা শুধু চাঁদা দিতে হয়। প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজগার করা যায়। এর মধ্যে আড়াই কেজি চালের পয়সা চাঁদা বাবদ চলে যায়। এই চাঁদা না দিলে পরিবার নিয়ে আমরা বেঁচে যাই। আমরা নতুন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, চাঁদাবাজি বন্ধ করা হোক।
মোহাম্মদ নামের আরেক অটোচালক বলেন, আমরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করি। সরকার পতনের পর সারা দেশে চাঁদা দেওয়া বন্ধ আছে। অথচ আমাদের গোয়ালন্দে এটা অব্যাহত রয়েছে। মাঝে কয়েক দিন বন্ধ ছিল। নতুন করে গত রবিবার থেকে আবার নিচ্ছে। পৌর এলাকায় পৌরসভার লোকজন এবং দৌলতদিয়ায় মোস্তফা মন্ডল এই টাকা আদায় করছেন। না দিলেই আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, আমি, পৌরসভার প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জোতিশ্বর পাল ও উপজেলা সহকারী কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম দুপুরের পর অটোচালকদের সঙ্গে পৌরসভায় বসেছিলাম। তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু কিছু চালক হঠাৎ করে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করি।
তিনি বলেন, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে আপাতত পৌর পার্কিং চার্জ বন্ধ থাকবে। রাজবাড়ীসহ অন্যান্য জায়গার মতো আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দৌলতদিয়া ঘাট যেহেতু বিআইডব্লিউটিএর। তাদের সঙ্গে কথা না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।