সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হওয়া বেশিরভাগ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলাতে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এসব কারখানায় কাজ শুরু হয়। তবে এখনও ২২টি শিল্পকারখানা বন্ধ আছে। এর মধ্যে অধিকাংশ পোশাক কারখানা। বাকিগুলো খোলা আছে। সব মিলিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আছে।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বন্ধ ২২টি কারখানার মধ্যে সাধারণ ছুটি রয়েছে ছয়টিতে। পাশাপাশি বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬-এর ১৩(১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ১৬টি। বন্ধ কারখানাগুলোর অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা। তবে বন্ধ কারখানাগুলোর মধ্যে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান আছে। কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা উপস্থিত হলেও কাজ বন্ধ রেখে বসে আছেন।
দুপুরে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, আশুলিয়ায় ২৭২টি কারখানার মধ্যে ১৩(১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ১২টি। কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ বা ছুটি রয়েছে আটটি। আশুলিয়ায় বৃহস্পতিবার চালু কারখানার সংখ্যা ২৫২। আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছেন ২৬৯ কারখানা কর্তৃপক্ষ। বেতন পরিশোধ করেনি চারটি কারখানা। শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কারখানাসংলগ্ন এলাকায় সেনাবাহিনী, এপিবিএন, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব দায়িত্ব পালন করছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, ‘সাভার ও আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় অধিকাংশ কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকরা। যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে, সেসব কারখানার মালিকপক্ষের প্রতি অনুরোধ করবো, কারখানা খুলে দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করুন।’
আশুলিয়ার শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। খোলা কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন শ্রমিকরা।’
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর কর্মকর্তারা বলেন, তাদের আওতাধীন সাভার, আশুলিয়া, ধামরাইয়ে তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা রয়েছে এক হাজার ৮৬৩টি। এর মধ্যে শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ও টিফিন বিল বাড়ানো, নারীদের সমানুপাতিক হারে পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ছাঁটাই না করাসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভে শিল্পাঞ্চলে গত মাসের শেষের দিকে অস্থিরতা দেখা দেয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে। এসব কারণে কারখানা মালিকপক্ষের অনেকে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে অনেক বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া হয়।