জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে হতাহতদের বাড়িতে মৌসুমি ফল দিয়ে ফেরার পথে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে হামলার শিকার হয়েছেন মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ নেতা। গুরুতর অবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এই হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন আহত ও স্বজনরা। এরইমধ্যে সিসিটিভি দেখে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার টেকেরহাট উত্তরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতরা জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের বাড়িতে মৌসুমি ফল পৌঁছে দিয়ে মাদারীপুরের রাজৈরের কাশিমপুর থেকে শহরে ফিরছিলেন বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টেকেরহাট উত্তরপাড়ে ‘বরিশাল গেট চাইনিজ ও বাংলা রেস্টুরেন্ট’-এ চা-নাশতা খাওয়ার জন্য সেখানে যান তারা। এ সময় রেস্টুরেন্টের সামনে পার্কিং করা মিজান পরিবহনের স্টাফরা বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারী সদস্যদের ইভটিজিং করে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এর প্রতিবাদ করায় বাসের শ্রমিক ও ছাত্রদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাদের ওপর হামলা চালায় বাসের শ্রমিক ও তাদের লোকজন।
এতে আহত হন সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আশিকুর রহমান হৃদয়, যুগ্ম সদস্য সচিব আশিকুর তামিম আশিক, যুগ্ম আহ্বায়ক মিথিলা ফারজানা নীলা, কিরণ আক্তারসহ পাঁচ জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। পরে আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে।
পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এই ঘটনায় মিজান পরিবহনের সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আহত কিরণ আক্তার বলেন, ‘মেয়েদের ওপর এভাবে হামলা চালাবে এটা বুঝতেও পারিনি। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এই ঘটনা ঘটেছে। এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অখিল সরকার বলেন, ‘মারামারির অভিযোগ নিয়ে ৫ ছাত্র হাসপাতালে এসেছেন। তাদের মধ্যে দুই জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাদারীপুর জেলার সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সিসিটিভিতে তার প্রমাণ রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।