X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরেছি’

তৌহিদ জামান, যশোর
০২ মার্চ ২০২২, ১৯:৩৪আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ২৩:২২

যশোরের অদম্য মেধাবী তামান্না নূরার চলার পথ কখনও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। জন্মের পর থেকে তাকে ও পরিবারকে বয়ে বেড়াতে হয়েছে নানা দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা তাদের গ্রহণ করেনি স্বাভাবিকভাবে। শত বঞ্চনা ও অবহেলা উপেক্ষা করে দৃঢ় মনোবলে এগিয়ে চলার আরেক নাম তামান্না।

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তামান্না নূরা, তার বাবা রওশন আলী, মা খাদিজা পারভীনের কথায় উঠে এসেছে সেসময়ের দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণার বর্ণনা।

পরিচয় দেন না স্বজনরা

২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। যশোর শহরের ফাতিমা হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে জন্ম হয় তামান্নার। রওশন আলী বলেন, ‘দিনটি আমাদের জন্য ছিল দুঃখের। কেননা এই অবস্থায় সন্তানের জন্ম হওয়ায় আত্মীয়-স্বজন দেখতে আসেননি। একপর্যায়ে নিজ পরিবার ঝিকরগাছার পানিসারা থেকে বিতাড়িত হয়ে শাশুড়ির বাড়ি একই উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরে অবস্থান নিই।’

আরও পড়ুন: পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না

তিনি বলেন, ‘যখন হুইলচেয়ার ঠেলে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যেতাম, তখন প্রতিবেশী, আশপাশের লোকজন দৌড়ে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিতো। তাদের ধারণা, সকাল সকাল প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে দেখলে অকল্যাণ হবে। এটি ছিল তাদের কুসংস্কার।’

তামান্না নূরা

খাদিজা পারভীন বলেন, ‘প্রতিবেশীরা টিপ্পনী দিতো, “অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা মুরগি কেটেছে না হলে মাছ কেটেছে। তা না হলে অনেক পাপ করেছে। এজন্য মেয়ে প্রতিবন্ধী হয়েছে”। জীবনে এমন অসংখ্য বাজে মন্তব্য শুনেছি।’

তিনি বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজন আমাদের পরিচয় দিতে লজ্জা পান। পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন না আমাদের। প্রতিদিন শত বাধা অতিক্রম করেই চলছি আমরা।’

তামান্নার হাতেখড়ি

তামান্না তখন ছোট। মাটিতে বসে খেলাধুলা করার সময় মা দেখলেন, মেয়ে পায়ের আঙুলে কাঠি আটকে মাটিতে আঁকাআঁকি করছে। তিনি স্বামীকে ডেকে দেখান, সেই সঙ্গে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। মেয়ে লেখাপড়া করতে পারবে বলে খুশি হন তারা। এরপর মাটিতেই পা দিয়ে বৃত্ত আঁকানো, দাগ দেওয়ার কাজ শুরু হয় তামান্নার।

রওশন আলী বলেন, ‘শিশুরা যখন লেখাপড়া শুরু করে তখন হাতেখড়ি হয়। কিন্তু তামান্নার পায়ের আঙুলে চক দেওয়ায় ব্যথা অনুভব করে। সেকারণে হাতেখড়ি হয়নি। একেবারে পেনসিল আর খাতায় পা দিয়ে লেখা শুরু হয়। মাত্র দুই মাসেই সব বর্ণ লেখা শিখে ফেলে। এরপর বাড়ির পাশে ব্র্যাক স্কুলসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েকে নিয়ে যাই। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্কুলে ভর্তি নিতে রাজি হয়নি কেউ।’

আরও পড়ুন: পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে তামান্না আক্তার নূরা

তামান্নার মা বলেন, ‘মেয়ের যখন চার বছর তখন স্থানীয় একটি স্কুলে নিয়ে যাই। সেখানে দুই মাস ক্লাস করেছিল। একদিন স্কুলে একজন অডিটর আসেন, তিনি তামান্নাকে দেখে জিজ্ঞেস করেন, কার শিশু। আমার সন্তান শুনে ওই অডিটর বলেন, এই শিশুকে এখানে রাখা যাবে না। কারণ হিসেবে জানান, হাত-পা নেই, কীভাবে লিখবে? তাকে বলি, লেখানোর দায়িত্ব আমার, আপনি কেবল তাকে বসতে দিন। তিনি রাজি হননি। সেদিন আমি আর মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরি। সবশেষে আমার মা (তামান্নার নানি) পাশের আজমাইন এডাস স্কুলে তাকে ভর্তি করে দেন।’

তামান্নার বাবা রওশন আলী

পড়ালেখায় সফলতা

বাঁকড়া আজমাইন স্কুলে ভর্তি হন তামান্না। সব শিশুর মতো বসতে পারেন না বেঞ্চে। পরিবার থেকে বসার জন্য একটি পাটির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ক্লাস শেষে বাবা দেখেন, সব শিশু তামান্নার মাথা ও ঘাড়ের ওপর দিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে। পরে একটি চৌকি বানিয়ে সেটি শিক্ষকের টেবিলের পাশে রাখা হয়; তামান্না সেখানে বসেই ক্লাস করতেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে তামান্না বৃত্তি পান। তখন থেকে সাফল্যের শুরু। এরপর এই স্কুল থেকেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান। পরিবারে আলোর সঞ্চার হয়।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কৃতিত্বের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আকাঙ্ক্ষা যেমন তামান্নার, তেমনি বাবা-মা বেশ আশাবাদী হন। তাকে ভর্তি করা হয় বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

আরও পড়ুন: সেই তামান্নাকে ফোন দিলেন প্রধানমন্ত্রী, বললেন ‘তুমি কাঁদছো কেন’ 

বাবা রওশন আলী বলেন, ‘এই স্কুলে মেয়েদের ক্লাস দোতলায়, ছেলেদের নিচতলায়। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে যাওয়া কষ্টকর হওয়ায় তামান্না ছেলেদের সঙ্গেই ক্লাস করতো। এই স্কুল থেকে জেএসসিতে জিপিএ-৫ পায় তামান্না।’

নবম শ্রেণিতে উঠার পর তামান্নার ইচ্ছা হয় সায়েন্স বিষয়ে পড়ার। কিন্তু বাবা জানান, সায়েন্সে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাসহ নানা ঝামেলা রয়েছে। তার মানবিকে পড়া উচিত।

রওশন আলী বলেন, ‘মানবিক বিভাগে পড়তে বলায় প্রায় এক সপ্তাহ তামান্না আমার সঙ্গে কথা বলেনি। পরে তার ইচ্ছার জয়ী হয়। সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করে। ২০১৯ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায়।’

তামান্না নূরার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

এসএসসি পাসের পরই তামান্নাকে ভর্তি করা হয় বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজে। তামান্নার বাবা বলেন, ‘বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কলেজে প্রতিনিয়ত হুইলচেয়ার ঠেলে নিয়ে যেতে হতো। খুব কষ্ট করেছে মেয়েটি। তার ফলই আজকের সফলতা। এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরই সবার প্রশংসা পেতে শুরু করে তামান্না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং

এইচএসসি পরীক্ষার পর তামান্না বাবাকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান। সে লক্ষ্যে তাকে একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি করানোর জন্য বাবাকে অনুরোধ করেন।

তামান্নার বাবা বলেন, ‘মেয়েটির ইচ্ছাশক্তির কারণে যশোরে কোচিং করানোর জন্য আমরা সপরিবারে চলে এসেছি। কোচিং সেন্টারের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়েছি। তামান্নার বিষয়ে যশোরের একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক আমাকে আশ্বস্ত করেন।’

আরও পড়ুন: এবার তামান্নার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী

মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের কোচিং করান ইউসিসি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ফেরদৌস আলম মিলন। এই কোচিং সেন্টারে তামান্নাকে ভর্তি করা হয়। ফেরদৌস আলম মিলন বলেন, ‘মেয়েটির কথা শুনে তার কলেজে গিয়েছিলাম। সেখানে তার আরও অনেক গুণের কথা জানতে পারি। তার বাবাকে বলি, পরীক্ষা শেষে যেন যশোরে তাকে নিয়ে আসেন। আমি তাকে মেডিক্যাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দুটি কোচিং ক্লাসেই নিয়েছি। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাকে কোচিং, প্রয়োজনীয় বই, নোট শিট ইত্যাদি সরবরাহ করেছি। আমি তার মঙ্গল কামনা করি।’

বিশ্বস্ত হাতজোড়া তামান্নার মাথার ওপরে

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এইচএসসি পরীক্ষার ফলে তামান্না ও তার পরিবার জানতে পারেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। চার হাত-পায়ের মধ্যে শরীরে থাকা একমাত্র পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তামান্না।

বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট পৌদাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (নন-এমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে তামান্না সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণি ও ভাই মুহিবুল্লাহ তাজ প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

তার ফলের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা ফোনে তামান্নাকে অভিনন্দন জানান। তারা তামান্নার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। 

তামান্নার মা খাদিজা পারভীন

পরদিন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তামান্নার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলেন। এরপর থেকেই তামান্নাকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর স্রোত নামে।

রওশন আলী অশ্রসিক্ত নয়নে বলেন, ‘ফল জানার পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি তামান্নাকে ফাতেমা হাসপাতালে অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে যাই। কারণ কয়েকদিন ধরে তামান্নার মা অসুস্থ হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এই হাসপাতালেই জন্ম হয়েছিল তামান্নার। জন্মের পর দুঃখ নিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছিল। সেই হাসপাতালে যখন ফল জানানোর জন্য মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল, তখনই প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়ে মেয়েকে অভিনন্দন জানান। মনে হয়েছিল, ওই দিন আনন্দের বন্যায় ভেসেছি আমরা।’

তামান্নার ইচ্ছা

তামান্না নূরা বলেন, ‘আমার চলার পথ কখনও সহজ ছিল না। অনেক বাধা, চ্যালেঞ্জ আর প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এই অবস্থানে এসেছি। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপক্ষো করে বাবা-মা আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। শিক্ষক, ক্লাসের বেশিরভাগ বন্ধু আমাকে খুব ভালোবাসেন।’

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে তামান্নার আবেদন

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে আনন্দের বিষয়, মানবতার মা শেখ হাসিনা আমাকে ফোন করেছেন। ছোটমা শেখ রেহানাও ফোন করে আমার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। সবসময় ভাবতাম আমার দুই হাত ও এক পা নেই। এখন বুঝেছি, দেশের ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত আমার মাথায় আছে। এসব হাতের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত হাতজোড়া মমতাময়ী মা শেখ হাসিনার। এটিই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রশান্তির।’

আমি শিখরে যেতে চাই

তিনি বলেন, ‘শুধু নিজের উন্নয়ন নয়, আমার মতো যারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু রয়েছে, আমি চাই তারা প্রত্যেকে যেন দেশের বোঝা নয়, আশীর্বাদ হয়। সেই চেষ্টা থাকবে। সবাই যেমন আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি আমিও সবার পাশে দাঁড়াতে চাই।’

/এএম/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার: যেসব নির্দেশনা দিলো পিএসসি
ভ্যাপসা গরমে জীবন চরমে ঢাবির গণরুমের শিক্ষার্থীদের
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!